নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর দেয়া এই সাক্ষাৎকারটিই আনি এরনোর প্রথম সাক্ষাৎকার। টেলিফোনে সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন ক্লেয়ার পাইটকাউ। তাঁদের মধ্যে কথা হয় ফরাসি ভাষায়। সাক্ষাৎকারটির ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করেছে নোবেল.অর্গ ওয়েব সাইট।
আনি এনরো : হ্যালো?
ক্লেয়ার পাইটকাউ : শুভ দিন, অথবা বরং বলি শুভ সন্ধ্যা। আমি কি আনি এনরোর সাথে কথা বলছি?
আএ : হ্যাঁ, আমিই বলছি। শুভ সন্ধ্যা।
ক্লেয়ার : শুভ সন্ধ্যা। আমার নাম ক্লেয়ার পাইটকাউ। আমাদের এখানে প্রতি বছর নতুন বিজয়ীদের সাথে সংক্ষিপ্ত টেলিফোন সাক্ষাৎকার গ্রহণের একটি ঐতিহ্য আছে। আপনার সঙ্গে কি দ্রুত এ নিয়ে কিছু কথা বলতে পারি?
আনি : এখন?
ক্লেয়ার : হ্যাঁ, এখনই!
আনি : অবশ্যই। অবশ্যই।.
ক্লেয়ার : প্রথমে আপনাকে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার জন্য অভিনন্দিত করছি। আমি বুঝলাম যে আপনি এইমাত্র একটা সংবাদ সম্মেলন শেষ করলেন?
আনি : হ্যাঁ।
ক্লেয়ার : আমি কি জিজ্ঞেস করতে পারি, পুরস্কার পাওয়ায় কেমন লাগছে আপনার? আমি বুঝতে পারছি একটা দীর্ঘ দিন কাটাচ্ছেন আপনি?
আনি : হ্যাঁ, অর্ধেক দিন তো চলেই গেছে। আমি কেবল জানতে পারলাম যে দুপুর একটার দিকে আমার পুরস্কারের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আমি যে সংবাদ সম্মেলনটা করলাম সেটাও খুব ভাল হয়েছে। কারণ আমার কাছে পুরষ্কার পাওয়ার অর্থ কী, আমি তার উত্তর দিতে পেরেছি। এটি আসলে একটি মহান দায়িত্ব এবং একই সাথে সম্মান। এই সম্মানের কারণেই আমাকে লেখালেখির বিষয়ে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
ক্লেয়ার : তো যখন পুরস্কার পাওয়ার খবরটা পেলেন তখন আপনি কোথায় ছিলেন, মাত্র একটার দিকে কি?
আনি : শোন, আমি রান্নাঘরে ছিলাম, সেখানে একটি রেডিও আছে। আমি রেডিও শুনছিলাম। কারণ আমি জানতে চেয়েছিলাম কে নোবেল পুরস্কারটা পেলেন। আর কী কাণ্ড!
ক্লেয়ার : আপনার নামই তো ঘোষণা করা হলো!
আনি : হ্যাঁ, আমার নামই তো বলা হলো!
ক্লেয়ার : আহা, খবরটা জানার কীরকম উত্তেজক একটা ব্যাপার ঘটলো!
আনি : হ্যাঁ, খুবই অবাক করা ব্যাপার ছিল। আরও যেটা ঘটেছে, আমি একা ছিলাম। এটা কি বলবো… আমি আপনাকে একটি তুলনা দিচ্ছি। ধরেন, আপনি মরুভূমিতে আছেন এবং আকাশ থেকে একটি ফোন এলো। আমি অনুভূতিটা এরকমই হয়েছে।
ক্লেয়ার : কী মজার গল্প। যাই হোক! আপনার অনেক লেখা আছে। তো কেউ যদি শুধু আপনার লেখাকে আবিষ্কার করতে চায়, কোথা থেকে তিনি শুরু করবেন?
আনি : আপনি জানেন, এবং আমিও মনে করি, আমার একটি বই আরেকটি বইয়ের মতো নয়। বিষয়আশয় এবং পরিপ্রেক্ষিতের দৃষ্টিকোণ থেকে। কখনও কখনও দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকেও আলাদা। তাই এটা বলা একটু কঠিন। ফলে, তরুণ এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন বইয়ের কথাই বলবো। তবে যে বইটি সবার উপযোগী হবে বলে মনে করছি, সেটা হচ্ছে ‘দ্য ইয়ার্স’। হ্যাঁ, এই বইটা।
আনি : ঠিক আছে! আপনি তরুণদের কথা বললেন। তরুণ লেখকদের জন্য, বিশেষ করে যারা তাদের মাতৃভাষায় লিখছেন, তাদের জন্য আপনার কি কোনো পরামর্শ আছে?
আমি : আমি মনে করি, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমরা যারা লিখি তাদের প্রচুর পড়তে হবে। কখনও কখনও তরুণরা বলে, “দূর, নাহ্, আমি পড়ি না… আমি লিখি!” কিন্তু না, এভাবে লেখালেখি করা সম্ভব নয়। আপনাকে অনেক পড়তে হবে। তাদের জন্য দ্বিতীয় পরামর্শ হচ্ছে, ভালো লেখার চেষ্টা করা নয়, বরং সততার সাথে লিখতে হবে। এই দুটো বিষয় কিন্তু এক নয়।
ক্লেয়ার : ভাল পরামর্শ।
আনি : হ্যাঁ, এসবই!
ক্লেয়ার : আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য, সময় দেওয়ার জন্য, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমরা আশা করছি ডিসেম্বরে স্টকহোমে আপনাকে দেখতে পাব।
আনি : হ্যাঁ!
ক্লেয়ার : আপনাকে আবারও ধন্যবাদ দিচ্ছি, এবং আমার সমস্ত অভিনন্দন!
আনি : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
ক্লেয়ার : বিদায়।
আনি : বিদায়।