নিহিত পাতালছায়া
ভস্ম আচ্ছাদিত আত্মা যেখানে কামনার ধিকি ধিকি আগুন জ্বলে…
সে আগুন খেতে চায় তোমাকে ও আমাকে… তুমি তো ‘নিহিত পাতালছায়া’
মর্মে এসে দেখা দাও… স্পর্শ করো আমার সমগ্র – আলজিভ অবধি
স্মৃতির চক্রবালে হাহাকার লিখি – মেঘও ছন্দোবদ্ধ যাপনে কিশোরী হয়ে ওঠে
যার হাতে দশভূজার অস্ত্র – শানিত করো তরবারি – ঘনাক অন্ধকার মৃত্যুর নিঃশ্বাসে
সব হারানোর যন্ত্রণায় ছুঁয়ে থাকে অন্তিম প্রহর – প্রকৃতির আচ্ছাদনে–
নিঃশর্ত মুক্তির আকুতিতে শুধু ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকে সারি সারি গাছ…
মৃত পাতা
একটা লোহা দাও, একটা সাঁড়াশী যেন নিজেকে তপ্ত উনুন থেকে নামিয়ে এনে তোমার খাবারের থালায় পদ্মপাতার উপরে নিজের হৃদয়কে সুদৃশ্যভাবে পরিবেশন করতে পারি। সেই সুযোগ কি আমাকে দিতে পারো? যখন রগের দু’পাশের চুল রূপোর মতো বিষণ্ণ উজ্জ্বল হয়ে আছে অথচ মন মৃত – পাতার মতো করুণ–
উদাস। তুমি কি মন্ত্রবলে তার সবুজ, তারুণ্য ফিরিয়ে আনতে পারবে না?
আমারও তো যৌবন চলে গ্যাছে – আমি এখনও খুঁটে খুঁটে খাই নিজের নখ– তোমার স্মৃতিতে দুঃখ পাই – আলস্য আসে নিজের মতো – চলেও যায় – এখনও ভাতঘুমের পর স্বপ্নে তুমি রোজ আসো – এতে কী প্রমাণিত হয়?
ক্লান্তির বীথি ঘুরে ঘুরে ও আমি হারতে শিখিনি – নিদ্রা আসে, নিদ্রা চলেও যায় – চেয়ে দ্যাখো, হায়–
তৃষ্ণা ছিল আসমুদ্র হিমাচল, পাথরে, বল্কলে শুধু তোমাকেই কামনা করেছি সেই তুমি এলে বড় অসময়ে
এখন কোথায় তোমাকে বসাই শ্যাম – শাড়ির আঁচল যে সংসারের ধুলোয় ভর্তি। কিভাবে মুছে দেবো তোমার বসবার আসন? সেই যখন এলেই তখন সময় থাকতে এলে না কেন? আমি যে অপেক্ষা করতে করতে সংসার-প্রতিমা হয়ে গেছি। এখন এই মিথ্যার সিংহাসন থেকে নেমে যাবার সাধ্য যে আর নেই।
ইচ্ছার রঙ
আমার জীবনপাত্রে অনেক বিষ পড়ে গিয়েছিল, কাউকে বলিনি সে কথা–
তোমাকে বলি ফিসফিস করে – অন্তর আত্মার আকাশে
তোমার ইচ্ছার রঙ তো দোকানের মতো মনে হয়।
সেখানে মৌরির দানার পাশে এলাচ, লবঙ্গদানা, আরও কত কি
তুমি কি এত ক্ষুদ্র! এই মহিমা নিয়ে ভালোবেসে দিন কাটাও
দেখো সমস্ত গ্রাম ঘুমিয়ে পড়েছে – রাত্রির অন্ধকার মুছে দিচ্ছে উঁচুনিচু ভেদাভেদ
প্রাণ খুলে হাসতেও পারো না – এত সংকীর্ণতা নিয়ে পায়রার খোপে
কী করে বসবাস করো – আলো বেঁকে গেলে ফিরবে না আর দেয়ালে
অনন্তের পথে নৌকা ভিড়িয়েছি
বনপথে উজ্জ্বল জোৎস্নায় ভালোবাসা নিঃসঙ্গ মানুষের কান্না
মোনালিসা রেহমান কলকাতায় থাকেন। কবি।
Leave feedback about this