কথাসাহিত্য ছোটগল্প বিশেষ সংখ্যা

হুসাইন হানিফ | রাক্ষসের মতো সেই কবিকে | ছোটগল্প

একটু আগে একজন কবির পোস্ট দেখলাম, দালাই লামাকে নিয়া লেখা। দালাই লামা নাকি কোনো শিশুকে চুমা খাইছে। খাইছে বা খাওয়ার ইচ্ছা করছে, জানি না। পরিষ্কার ছিল না পোস্টটা। কিন্তু দালাই লামা নাকি ইচ্ছা পোষণ করছে যে শিশুটাকে গভীর চুম্বন দিতে চায়, বা শিশুটাকে জিগ্যেস করছে যে তুমি কি আমার জিব্বাটা চুষে দিবা। কবি এইটাকে খুব একটা খারাপ মনে করতেছে না। সে লিখছে :

“সেইদিন ছেলেটার সাথে যা ঘটছিলো, তা হিউমারেরই একটা অংশ বইলা আমার বিবেচনা হয়। অশ্লীল ভাবার কোনো লজিক খুঁইজা পাইতেছি নাকি? যদি তা নাও হয়—৮৭ বছর বয়সী একজন ব্যক্তির যৌন চেতনার ফিলোসফি নিয়ে কথা বলা যুক্তিযুক্ত মনে করতেছি। যেহেতু চুম্বন আর sucking প্রেম-যৌনতার অন্যতম অলংকার। ৮৭ বছরের এক বৃদ্ধ ওইটুকু এক বাচ্চার প্রতি কী প্রকারের যৌন-কামুকতা পাইছেন বলে আপনি বিবেচনা করেন? ছোট ছেলেটাকে বলা তার Suck শব্দটা ঘৃণ্য কিছু, এইটা এক বাজে কুতর্ক। তাঁরে অন্য কোনো শক্ত ঘটনা দিয়া তলানো যাইতো। আর একজন আধ্যাত্মিক গুরুকে ‘চোষা’ শব্দ প্রয়োগ দিয়া জাস্টিফাই করা জ্ঞানের পরিচয় নাকি? অন্য কোনো মামলা হইলে, ভাবা যাইতো বিষয়টা। আর দালাই লামার শান্তিতে নোবেল পাওয়ার ঘটনাটা, কোনো উন্নত মাল খাওয়ার চ্যাপ্টার না কোনোভাবেই। এক ‘চোষা’ শব্দের জন্য কোনো ব্যক্তির শত ভালো কাজরে খারিজ করা যায় না।”

কবির নাম অনিমেষ পূর্ব। হিন্দু সম্ভবত। বৌদ্ধও হইতে পারে। খুব একটা পরিচিত না। কবিতা পড়ছি কিছু। রুচি ভালোই। কথা হয় নাই কখনো। তার পোস্টে কখনও লাইক কমেন্ট করি না। সেও আমার পোস্টে লাইক কমেন্ট করে না। আমি তার পোস্টের নিচে কমেন্ট করতে চাইলাম। কিন্তু ঝগড়া লাগবে ভেবে বাদ দিলাম।
একটু আগে দা হোয়াইল মুভি দেখলাম। দেখা শেষে ফেসবুকে ঢুকছিলাম। হোয়াইল দেখার প্রতিক্রিয়া শেয়ার করলাম ফেসবুকে। করে একটু স্ক্রল করতে গিয়া ওই লেখাটা সামনে আসল।

হালকা খুদা লাগছিল, বা লাগে নাই। এমনি মনে হইলো যে কিছু খাওয়া দরকার। কিন্তু খাওয়ার মতো কিছু নাই। দুপুরে খিচুড়ি রান্না করছিলাম। তারই খানিকটা আছে। রাতে খাব বলে। এখন সন্ধ্যাও হয় নাই। কিন্তু খেতে ইচ্ছা করতেছে; তাই খিচুড়ি খাইলাম। খাইতে খাইতে ভাবলাম।
ভাবলাম, ভাই অনিমেষ, তুমি কি বুঝবা যে একজন বুড়া মানুষ একটা বাচ্চা ছেলেকে ঠোঁটে চুমা খাইলে, ভেতরে জিব্বা ঢুকায়া দিলে কেমন জঘন্য লাগে? তুমি আছো শব্দ নিয়া। ঘটনা আর শব্দ কখনওই এক না। শব্দটা কখন উচ্চারণ হইছে তুমি জানো সেইটা? দালাই লামা চুমা খাইছে কি খায় নাই, নাকি চুমা খাইতে খাইতেই এইটা জিগ্যেস করছে, তা স্কিপ কইরা রাইখাই এইটা বলা যায় যে একটা শব্দ নিছক শব্দ থাকে না, যখন তা রক্ত মাংসের মানুষের ভেতর ঘটে, বিশেষ কোনো মুহূর্তে উচ্চারিত হয়।

আমিও হয়তো বুঝতাম না। কিন্তু আমার চাচাতো ভাই যেদিন একটা দুঃখের ঘটনা শোনাইলো সেদিন বুঝছিলাম। তাকে আমি জিগ্যেস করছিলাম, আসলে কী এমন হইছিল যে শেষ পর্যন্ত তুমি মাদ্রাসায় পড়া বাদ দিয়া দিলা?

সে অনেকক্ষণ চুপ কইরা ছিল। উত্তর দিবে কিনা বুঝতেছে না। আমি তাকে ব্যাখ্যা করতে লাগলাম আমার প্রশ্নের কারণটা।

একটা সময় তো তুমি ব্যাপক ধর্মভীরু ছিলা, না মানে আগে যে তুমি নরমাল ছিলা, স্কুলে থাকতে, আমরা যেইরকম সেইরকম; তারপর মাদ্রাসায় গেলা, মাদ্রাসাকেই তুমি আপন মনে করতে শুরু করলা, এই কথা বলছো; তাছাড়া তোমার একটিভিটি তো মনেই আছে, তা মাদ্রাসা আর পড়ব না এই বিষয়টা কখন মাথায় ঢুকলো, মানে কখন থেকে?

সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, দেখো একটা ঘটনা দেখে তো মানুষ তার জীবনের গতিপথ বদলায় না। কিন্তু শুরুর ব্যাপারটা যদি বলো তাহলে একটা গল্প তো থাকেই।

আমি তার দিকে খুব হাম্বল এবং আগ্রহী দৃষ্টিতে তাকায়া ছিলাম, যে কী বলে সে।

সে আমাকে বলল, আমি তোমাকে যেই গল্পটা এখন বলব, তা আমি আমার জীবনে দ্বিতীয় কাউকে বলি নাই; মনে হয় এই জীবনে আর কাউকে বলতেও পারব না। এমনকি বউকেও বলা সম্ভব না।

আমি জানি, সে আমাকে বিশ্বাস করে।

তবু সে ভূমিকা করেই বলল, দেখো আমি তোমাকে বিশ্বাস করি, আশা করি তুমি এই ঘটনা কাউকে বলবা না।
আমি তার চোখে চোখ রেখে মাথা নাড়াইলাম। নিশ্চয়তা দিলাম যে এই কথা আর কেউ জানবে না।

সে বলল, একটা সময় আমি সত্যিকার অর্থেই ধর্মভীরু হয়ে পড়ছিলাম। আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে নামাজ পড়ি তখন। বালেগ হওয়ার পর থেকে যত কাজা নামাজ হইছে সবকিছুর কাজা আদায় করতে থাকি। নফল নামাজ পড়ছি। নামাজ পড়ি মাদ্রাসার মসজিদের প্রথম কাতারে। প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াত করি সকাল-সন্ধ্যা। মাদ্রাসার পড়া তো আছেই। রেজাল্টও খুব ভালো হচ্ছিল তখন। তাহাজ্জুদ পড়ি প্রতি রাতে। টানা ছয় মাস আমার তাহাজ্জুদ কাজা হয় নাই। এর ভেতর রমজান মাস আসলো। রমজান মাসের এক সপ্তাহ আগে মাদ্রাসা ছুটি হয়। সবাই বাড়ি গেলেও আমি বাড়ি যাই নাই। বাড়ি গেলে পাপকাজে লিপ্ত হতে পারি, সেই ভয়। রোজার সময় ইফতারির ব্যবস্থা করা হয় মাদ্রাসাতে। সেইসবের জন্য কিছু ছাত্র লাগে। মানে জগ গ্লাস দেওয়া। বড় বড় তাবলীগের থালিগুলি সব ধুইতে হয়। আরও কিছু খেদমতের বিষয় আছে। প্রতি রমজানেই কিছু ছাত্র মাদ্রাসায় থেকে যায়। আমিও তাদের সাথে থাকলাম। টার্গেট হলো রোজার শেষ দশ দিনে ইতেকাফ করব। তখন আমি হস্তমৈথুনও করতাম না। মাদ্রাসাকেই নিজের ঘরবাড়ি মনে করি। ঈদেও বাড়ি যাব না বলে সিদ্ধান্ত নিই।

আমি আচ্ছা আচ্ছা বলে জানান দিচ্ছি যে আমার মনোযোগ ঠিক আছে। গল্প চালায়া যাও।

তো, অনেক হুজুর আর ছাত্ররাও ইতেকাফ করত মসজিদে। আমি ওই সময় হুজুরদের খুব সম্মান করি। শহীদুল্লাহ হুজুরের খেদমত করি। জামা কাপড় ধুয়ে দেই, রুম ঝাড়ু দেই, ভাত তুলে দেই, নিজে হুজুরের রুমেই খাই। শহীদুল্লাহ হুজুর ইতেকাফে বসছিল তিন তলায়। তার খেদমত করি। পাশাপাশি আরেকজন হুজুরেরও খেদমত করি। সেই হুজুরকে খুব শ্রদ্ধা করতাম, দূর থেকে তাকে ভক্তি শ্রদ্ধা করতাম। তাকে সবাই আট নাম্বার হুজুর বলে ডাকে।
আমি বললাম, আট নাম্বার হুজুর? মানে কী?
তার রুমের নাম্বার আট। আরে শোনো আগে কী বলি।
মনে হলো গল্প বলার মাঝখানে আটকায়া দেওয়া পছন্দ করতেছে না।
সেই আট নাম্বার হুজুর ছিল খুবই সাহসী আর প্রতিবাদী। মাদ্রাসায় সব থেকে সাহসী আর ব্যতিক্রম ছিলেন তিনি। তার বাড়ি চট্টগ্রাম। পাতলা করে সব সময় পান খাইতো। পড়ায় খুব ভালো। এই কারণে তাকে বাদও দিতে পারে না। অনেক পুরাতন ওস্তাদ। তিনি কোনো একটা ইসলামি দল করেন। কিন্তু মাদ্রাসায় তার দল করা নিষিদ্ধ। রাজনৈতিক কোনো দলকে সাপোর্ট করা, তাদের সাথে সম্পর্ক রাখা নিষিদ্ধ। তো তিনি যে দলটা করতেন, মাদ্রাসার হুজুররা মনে করতো সেই দলটা বেদাতি। সেই হুজুরটা কাউকেই পাত্তা না দিয়া সেই দলটাই করেন প্রকাশ্যে।

তো এইটা নিয়া মাদ্রাসার সব হুজুর তার ওপর খ্যাপা। ব্যাপারটা আমার ভালো লাগছে। ভালো লাগছে মানে বোঝোই তো, আমাদের গুষ্টির সবার রক্ত গরম। আমি হুজুর হলে কী হবে। রক্ত বলে তো একটা ব্যাপার আছে। নিজেরও রাগ বেশি।
তো যাই হোক, সেই হুজুরও ইতেকাফে বসছেন। আমি তাকে হেল্প করার চেষ্টা করতাম। খেদমত করা শুরু করলাম। খেদমত হইলো এক্সট্রা কেয়ার। নরমালি তোমার যেই জিনিসটা লাগবে এখন, তা আগে থেকেই বুঝতে পারা, তা ব্যবস্থা করাই হচ্ছে খেদমত। মানে ধরো, হুজুর ফজরের আজান শুনে ঘুম থেকে উঠছে, তার সর্বপ্রথম দরকার ওজুর পানি। ওজুর পানিটা তাকে ব্যবস্থা করে দেওয়া। মোট কথা হুজুরকে খুশি করাই হচ্ছে খেদমত।

তো ইতেকাফে শহীদুল্লাহ হুজুরের খেদমত আর অন্যান্য কাজের পাশাপাশি আট নাম্বার হুজুরের খেদমত করতেছিলাম। একদিন মনে হলো, রাতে কারেন্ট যাইতে পারে, একটা বেচন বা হাতপাখা নিয়া রাখি। যদি হুজুরের গরম লাগে বাতাস করতে পারব। মজার ব্যাপার হইলো, হুজুরের দলের প্রতীক বা মার্কা হইলো হাতপাখা। তিনি দলের বড় নেতাদের একজন।

একদিন সত্যি সত্যিই কারেন্ট গেল। কারেন্ট যাওয়ার পর আমি বেচনটা নিয়া আইসা বাতাস করতে ধরলাম। এর ভেতরেই হুজুরের সঙ্গে আমার সম্পর্ক গড়ে উঠছে। নরমালি সেই হুজুরের কাছে ছাত্ররা যায় না। একটা কারণ হুজুর খুব রাগী। দ্বিতীয় কারণ মাদ্রাসার অন্য হুজুররা সেই ছাত্রটাকে মার্ক করে রাখবে। সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখবে।

যাই হোক আমার খেদমতে উনি খুশি। বিশেষ করে সেই কারেন্ট চলে যাওয়ার পরে হুজুরের যাতে গরম না লাগে সেই জন্য বেচন নিয়া আইসা বাতাস করতেছিলাম। কারেন্ট গেছে অন্ধকার। হুজুর এতেকাফে বসছেন দোতলায়। দোতলা তখন নির্জন। নির্জনতার জন্যই এইখানে হুজুর সিট করে নিছেন। যাতে নির্বিঘ্নে ইবাদত করতে পারেন।
তো আমি বাতাস করতেছিলাম, ব্যাপারটা হুজুর খুব পছন্দ করছে। আমাকে জানাইলো। খুব খুশি সে বোঝা গেল। বারবার বলতেছিল। আমি বিনয়ে গলে যাচ্ছিলাম। তিনি আমার মাথায় হাত বোলায়া দিচ্ছিলেন। আমি মনে করতেছিলাম এত বড় বুজুর্গ মানুষ আমার মাথায় হাত দিছেন নিশ্চয় আল্লা আমাকে বড় আলেম বানাবেন। মাথায় হাত শোতরাতে শোতরাতেই তিনি আমাকে বুকে টেনে নিলেন। বলতেছিলেন, আমার নাম ধরে, তুমি আমাকে যে খুশি করছো, সেইটা আমি সহজে ভুলব না। আল্লার রহমতে তুমি খুব সুন্দর। আসো আমার বুকে আসো। আমি অস্বস্তি বোধ করতেছিলাম এই অতিরিক্ত আচরণে। সেই হারামজাদা আমাকে ফস করে চুমা খাওয়া শুরু করলো। নিজেকে ছাড়ায়া নিতে নিতে, এমনকি কী হচ্ছে এইটা বুঝতে বুঝতেই সে আমার ঠোঁটে চুমা খায়া ফেলছে এবং ঠোঁট চোষা শুরু করে দিছে। নিজেকে ছাড়ায়া নিয়া আমি হতভম্ব হয়ে বসে থাকলাম কিছুক্ষণ। সে আমাকে বলতেছিল, এই যে তোমাকে আমি আদর করলাম, এইটা কাউকে বলবা না। তোমার খেদমতে আমি খুব খুশি হইছি। তাই একটু আদর করে দিলাম।

সেই ঘটনাতে আমার মন ভেঙে গেল। আমি এরপর থেকে যেন ধর্ম থেকে আলাদা হয়ে যাইতে লাগলাম। আস্তে আস্তে পাপ করা শুরু করে দিলাম। পত্রিকা পড়ি। বিশেষ করে বিনোদন পাতা। বিনোদন পাতায় দেশি-বিদেশি নায়িকাদের খোলামেলা ছবি ছাপা হইতো। মাদ্রাসায় তো আর এর বেশি কিছু পাওয়া সম্ভব না। মোবাইলও নিষিদ্ধ। হস্তমৈথুন করি। বাড়ি আসলে বাড়ির মোবাইলে ব্লু ফিল্ম তুলে আনি। তোমারটাতেও তো অনেক দিন দেখছি। বই তো পড়ার অভ্যাস ছিলই। বিধর্মী নাস্তিকদের বই পড়া শুরে করে দিলাম। আস্তে আস্তে মনে হলো মাদ্রাসায় পড়ব না। এইভাবেই আসলে…
গল্পটা শেষ কইরা, আমার চাচাতো ভাই অনেকক্ষণ চুপ করে ছিল। রাগে ঘেন্নায় তার মুখ কালো হয়ে উঠছিল, মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছিল না।
আমি জীবনে এর থেকে শতগুণ ভয়ঙ্কর গল্প শুনছি, সাক্ষী হইছি। ছোটবেলায়, আমাদের এক মামা, ক্রিকেট খেলার সময় দুই তিনজনকে সাথে নিয়া তাদের জমিতে বাড়ি করা একটা গরীব কটাপুইরা লোকের বাচ্চাকে ধরে পুটকির ছবি তুলছিল তার নোকিয়া বাটন ফোন দিয়া। একবার দুইবার না। তিন চারবার। আমার জীবনে সব থেকে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার একটা এইটা। সেই মামা এখন চেয়ারম্যান হতে চায়। ভোটে দাঁড়াইছিল। অল্প কিছু ভোটের জন্য এইবার ফেইল করছে। ঈদের দিন দেখলাম বাড়ি বাড়ি গিয়া মানুষের খোঁজ খবর নিচ্ছে।
আমার চাচাতো ভাইয়ের ব্যাপারটা ঘটনা হিসাবে ছোটই। কিন্তু এইটার প্রভাবটার কথা ভাবতেছি। আমার সেই চাচাতো ভাই, যে কিনা মাদ্রাসা ছাড়ার জন্য এই ঘটনাকে বড় কারণ মনে করে, তার কথা প্রায়ই ভাবি। ভাবি, কেমন অদ্ভূত ব্যাপার এইটা।
ভাবি, এই দুঃখের ঘটনার কারণে চাচাতো ভাই মাদ্রাসা ছাড়ছে। মাদ্রাসা ছাড়ার পর সে ব্যাপক খুশি, তাই মনে হয় দেখে।

ভাবি মাদ্রাসা ছাড়ার জন্য কি তার আসলেই দুঃখ হয়? নাকি মাদ্রাসা ছাড়তে পাইরা সে বাঁইচা গেছে? মানে ঘটনাটা কি তার মাদ্রাসা ছাড়ার পক্ষে গেছে না বিপক্ষে গেছে? প্রশ্নটা মনে আসাতে, একটু হাসলাম। হাসলেও, ভাবলাম কেমন বেকুবের মতো কথাও মনে আসে, না। একজন মানুষের দুঃখের গল্প নিয়াও আমরা হাসি ঠাট্টা করতে পারি।

যাই হোক, শুনি সে আর নামাজ কালাম কিচ্ছু পড়ে না। বিয়া করছে। সুখী জীবন। মাঝখানে নাস্তিকও হইছিল।

খিচুড়ি খাওয়া শেষ হইলে আমি দালাই লামার ব্যাপারটা নিয়া গুগলে সার্চ দিলাম। ভিডিওটা সামনে আসলো। ইউটিউবে ঢুকে ভিডিওটা দেখলাম।

৬/৭ বছরের একটা বাচ্চা। বৌদ্ধ ধর্মগুরু দালাই লামাকে সম্মান করতে মঞ্চে গেছে। দালাই লামা বাচ্চাটার ঠোঁটে একটা চুমা দিল। দিয়া তাকে বলল, আমার জিব্বাটা চুইষা দাও, সাথে সাথে সে নিজের জিব্বা বের করে বাচ্চাটার ঠোঁটের কাছে নিয়া গেল। সামনেই শত শত মানুষ। হাসতে হাসতে হাততালি দিয়া উঠলো সবাই!
ভিডিওটা দেইখা গা রি রি করে উঠলো। মন মেজাজ আগুন হয়ে গেল। ভাবলাম, একটা শক্ত মন্তব্য করে আসি সেই কবির পোস্টের নিচে। যা হবার হবে। তার আইডি খুঁজে বের করলাম। টাইম লাইনে গিয়া দেখি পোস্টটা আর নাই। রিমুভ করে ফেলছে। আইডিতে এমনিতেই একটু ঘুরলাম। বায়োতে লেখা দেখলাম : A Poet like a demon!

হুসাইন হানিফ
কথাসাহিত্যিক। জন্ম : জানুয়ারি, ১৯৯৯, চর ঘাগুয়া, সারিয়াকান্দি, বগুড়া। প্রকাশিত গল্পের বই : বহিষ্কার। পেশা ফ্রিল্যান্স বুক ডিজাইনার।

    Leave feedback about this

    • Rating

    PROS

    +
    Add Field

    CONS

    +
    Add Field