তীরন্দাজ Blog কথাসাহিত্য উপন্যাস হাওয়ার্ড ফাস্ট | মুক্তির পথ | ভাষান্তর : মোবাশ্বেরা খানম বুশরা | ধারাবাহিক উপন্যাস [পর্ব ৩]
উপন্যাস কথাসাহিত্য

হাওয়ার্ড ফাস্ট | মুক্তির পথ | ভাষান্তর : মোবাশ্বেরা খানম বুশরা | ধারাবাহিক উপন্যাস [পর্ব ৩]

উপন্যাসের পটভূমি

উপন্যাসের স্থান : আমেরিকা।
ঘটনাকাল : সিভিল ওয়ার (১৮৬১-১৮৬৫) পরবর্তীকাল
আমেরিকার সবচেয়ে জঘন্য প্রথাটি ছিল দাসপ্রথা। কালোদের ওপর যে নির্য়াতন চালানো হয়েছে, মানব ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায় ছিল সেটি। এই দাসত্বপ্রথা আরও চলবে কি না, সিভিল ওয়ার বা গৃহযুদ্ধটা ছিল তাই নিয়ে। কিন্তু একসময় এই যুদ্ধ শেষ হলো। কালোরা মুক্ত হলো।
উপন্যাসের পাত্রপাত্রী ও কাহিনি : কালো জনগোষ্ঠী। তারা মুক্ত, কিন্তু তারপর তাদের যে নতুন পরিস্থিতি মুখোমুখি হতে হচ্ছে, এই উপন্যাসের কাহিনি সেটাই। মুক্তির পথে তারা এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কীভাবে?
লেখক হাওয়ার্ড ফাস্ট কালোদের মুক্তির পথে এগিয়ে যাওয়ার গল্পই বলেছেন এই উপন্যাসে। মার্কিন ইতিহাসের জঘন্যতম ও চিত্তাকর্ষক গল্প এটি। উপন্যাসটিও বিশ্বজুড়ে আলোচিত একটি বিখ্যাত উপন্যাস।

ঔপন্যাসিকের উপক্রমণিকা

যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে। দীর্ঘ রক্তঝরানো সেই যুদ্ধ। এ্যাতো বড় যুদ্ধ বোধহয় আর দেখে নি পৃথিবীর লোক। সে যুদ্ধ শেষ হলো শেষ পর্যন্ত। নীল পোশাক পরা লোকেরা ফিরে এল ঘরে। ধূসর পোশাক পরা লোকেরা হতবাক দৃষ্টি আর ক্ষরিত হৃদয় নিয়ে তাকিয়ে রইল তাদের বিস্তীর্ণ ভূমির দিকে। দেখল যুদ্ধ কি করতে পারে।
এ্যপোম্যাটোক্স কোর্ট হাউজে জেনারেল লী তার অস্ত্র সমর্পন করলেন আর অবসান হল এই যুদ্ধের। উষ্ণ দক্ষিণ দেশে চব্বিশ লক্ষ কালো মানুষ মুক্ত হল। বড় কষ্টে পাওয়া এই স্বাধীনতা, বড় মূল্যে কেনা। একজন মুক্ত মানুষের কাছে তার গতকাল আর আগামীকাল দুটোই একান্ত নিজের। সে দুটোরই হিসাব রাখে। ক্ষিদেয় পেট জ্বলছে, কিন্তু কোনো প্রভু নেই তোমার মুখে খাবার তুলে দেবার, তবে দ্রুত পা ফেলে হেঁটে গেলেও তো কেউ নেই যে বলবে, আস্তে হাঁটো। এই কালোদের মধ্যে দু’শ হাজার ছিল প্রজাতন্ত্রের সৈন্য। তাই যখন যুদ্ধ শেষ হলো অনেকেই ঘরে ফিরে এল হাতের বন্দুক সাথে নিয়ে।
গিডিয়ন জ্যাকসন ছিল তাদেরই একজন। দীর্ঘ মজবুত দেহে ক্লান্তি, হাতে বন্দুক, গায়ে রংচটা নীল পোশাক, সে ফিরে এল ক্যারোলাইনার মাটিতে, কারওয়েল জমিদারিতে (প্ল্যান্টেশনে)। বিশাল সাদা বাড়িটা যেমন ছিল তেমনি দাঁড়িয়ে আছে ওর মনে পড়ল। যুদ্ধে তার কিছুই হয় নি। কিন্তু মাঠে আর বাগানে আগাছা, জঙ্গল। কারওয়েলরা চলে গেছে, কেউ জানে না কোথায়। মুক্ত মানুষেরা ফিরে এসে তাদের পুরোনো দাস কোয়ার্টারগুলোতে আবার জীবন শুরু করল, যারা কোথাও যায় নি তাদের সাথে। যতই মাস যেতে লাগল কারওয়েল জমিদারিতে আরও আরও মুক্ত মানুষেরা ফিরে আসতে লাগল, উত্তরের ঠান্ডা ভূমি থেকে, যেখানে তারা স্বাধীনতা খুঁজতে গিয়েছিল, ইউনিয়ন সেনাবাহিনী থেকে যেখানে তারা লুকিয়ে ছিল, পাইনের বনে অথবা জলাভূমিতে। সব জায়গা থেকে মুক্ত মানুষের দল ফিরতে লাগল। পুরোনো জীবনে ফিরে গভীর বিস্ময়ের সাথে ওরা দেখল যে ওরা এখন স্বাধীন।

পর্ব ৩

‘গিডিয়ন লোকেদের এখন দরকার একজন নেতার। ভোটের জায়গায় আমি নিজেকে বলেছিলাম, আইন বলছে কালোরা মুক্ত, আইন বলছে ভোট দাও, আইন বলছে, কালোরা দাসত্ব থেকে বেরিয়ে আসবে, নতুন জীবন গড়বে। নিগাররা পড়তে পারে না, লিখতে পারে না, এমন কি চিন্তাও করতে পারে না। চিন্তা করতে শিখলে তাকে চাবুক মারা হয় বা বাজারে বেচে দেয়া হয়। পড়তে শেখার জন্যে তাকে তিনশ’ চাবুক খেতে হয়েছে, নিগার যেন বুড়ো কুকুরটার মতো যাকে বাড়ির বাইরে বের করে দেয়া হয়েছে নিজের খাবার খুঁজে আনতে। আমি মনে মনে নিজেকেই জিজ্ঞেস করেছি কে এইসব লোকদের নেতৃত্ব দেবে, যত বড় কথাই বলুক যতই হাঁটাহাঁটি করুক ওরা সবাই ভয় পায়। কে ওদের নেতৃত্ব দেবে?’
‘আমাকে কেন বেছে নিলেন?’ গিডিয়ন জানতে চাইল,‘ নিজে কেন নিলেন না এ দায়?’
‘লোকেরা তোমাকে পছন্দ করেছে, ’ব্রাদার পিটার বললেন।‘ এখন থেকে এটাই ঠিক হল।’ ব্রাদার পিটার ঝুঁকে গিডিয়নের হাঁটুতে তাঁর শুকনো দুটো হাত রেখে বললেন,‘ দেখ ভাই গিডিয়ন, – তুমি বলছ তুমি লিখতে পার না। কেউ তো জন্ম থেকেই পড়তে পারে না, তোমাকে সেটা শিখতে হবে, তুমি লিখতে শেখ, পড়তে শেখ। আমি একটু একটু লিখতে পারি, মনে হয় পনের কি বিশটা শব্দ হবে। ঠিক আছে এখন আমি না হয় সেগুলোই লিখি আর তুমি সেগুলো পড়ে পড়ে শেখ, তুমি অন্তত পড়তে তো শুরু কর…।’
গিডিয়ন অসহায়ের মত মাথা নাড়তে লাগল।
‘একটা কথা মনে রেখ,’ ব্রাদার পিটার বললেন,‘শব্দগুলো একটার পর একটা সাজিয়ে বসালে সেটাকে সাদা লোকেরা যেটাকে বলে ব্যাকরণ তাই হয়। ঘাড়ে যার মাথা ঠিকমত আছে সেই সঠিক কথা বলে, আমার মতো কালো নিগার তো তা জানি না। কিভাবে সেটা জানবে বল?’
‘ঈশ্বর জানেন,’ গিডিয়ন বলল।
‘ঈশ্বরই তো জানেন। আমিও জানি। তোমাকে শুনতে হবে তো। সাদা লোকেরা কি বলে শুনতে হবে তোমাকে। দিনের প্রতিটি মিনেটে তোমাকে তাই শুনতে হবে। তুমি নিজে নিজেই শিখে নেবে। হয়ত এমন দিন আসবে, তুমি নিজে একটা বই পড়তে পারবে। এমন কিছু নেই যা তুমি বইতে পাবে না। যীশুর উপদেশের মতই।’
‘মানুষ নিজের হাতে ফসল ফলায়’, গিডিয়ন বলল,‘ সেটাই তো ওর সারাদিনের কাজ। তাহলে কি করে পড়াশোনা দিয়ে ঐ মাথাটা ভরাবে?’
‘ সে যখন ঐ সেতুটা আসবে তখনই না হয় পার হোয়ো। এর মধ্যে দেখ, জেফ তো ঘরের কাজ করতেই পারে। মার্কাসও চমৎকার ছেলে। সব কিছুতেই যীশুর আশির্বাদ দেখতে পাচ্ছ তো। নতুন একটা পৃথিবী আসছে, নতুন সুন্দর উজ্জ্বল এক পৃথিবী আসছে।’
উনি স্মিত হেসে হাত তুলে দেখালেন গাদা হয়ে থাকা জানালাবিহীন দাস কোয়ার্টারগুলোর দিকে। লম্বা সরু হাতদুটো ভাঁজ করে মাথা ঝুঁকিয়ে বললেন ‘এগুলো সব ঝেড়ে ফেল, ঈশ্বরের প্রশংসা কর।’
গিডিয়ন বলল,‘আচ্ছা এই কনভেনশনের ব্যাপারে কি বুঝছেন আপনি?’
‘এরা আইন তৈরি করবে। সংবিধান হচ্ছে বাইবেলের মতা একটা বই। শুয়োরের মতো ছুটে দৌড়ানো কালোদের জন্যে একটা দুনিয়া হতে পারে। সাদা লোকেরা কালোদেরকে ঘেন্না করে, কালোরা সাদা লোকেদের ভয় পায়। এভাবে তো চলতে পারে না।’
‘কি করে আমি বুঝব কোনটা ভাল আইন কোনটা খারাপ?’
‘কিভাবে তুমি বোঝো কে ভাল লোক কে খারাপ? কিভাবে বোঝ কোন মহিলাটা দুশ্চরিত্র কে নয়?’
‘সেটা বোঝবার জন্যে তো আমার একটা মাপ আছে।’
‘এখানেও তাই থাকবে। কেন তুমি লেখাপড়া কিছুই জানো না বল তো? আসলে কালোদের জন্যে তো কখনো কোনো স্কুলই ছিল না। এমন কি গরীব সাদাদের জন্যেও কোনো স্কুল ছিল না। এখন শুরু হবে। স্কুল তৈরি করার জন্যে একটা আইন বানিও। সেটা ভাল আইন হবে। এই যে কারওয়েল জমিদারি প্রায় বিশ হাজার একর হবে, এখন এটা কার? কারওয়েলের? সরকারের? কালোদের না সাদাদের? কালোরা জমি চায়, – সাদারাও চায়। তবে সবার জন্যেই পর্যাপ্ত জমি আছে। তাহলে এখন এটা ভাগ হবে কি করে?’
‘আমি কি করে সেটা জানব?’
‘ধৈর্য ধর গিডিয়ন, ধীরে ধীরে সবই সহজ হয়ে যাবে।’
‘তাহলে আপনি কেন প্রতিনিধি হলেন না?’ গিডিয়ন জিজ্ঞেস করল।
‘লোকেরা কেন আমাকে ভোট দিল না বল? বোঝাই তো যায় গিডিয়ন। আমি একটা বুড়ো হাবড়া লোক, ঠিক যতটা সপ্রতিভ আছি তেমনি থাকব। একদিন আমাকে দেখে তুমি নিজেই বলবে কি করে যে আামি এই বুড়ো কালো লোকটার কাছ থেকে আশ্বাস খুঁজে পেতাম! বুড়ো মূর্খ কালো লোকটা!’
‘আমি কখনোই তা বলব না।’
‘ঈশ্বরের আশীর্বাদ তোমার ওপরে থাকুক। তুমি কিন্তু একটা ছোট্ট বাচ্চার মতো। সবকিছু তৈরি। শুধু অপেক্ষা কর আর দেখ।’
‘ইস কি যে ইচ্ছে করছে এসব বিশ্বাস করতে’, গিডিয়ন মাথা নাড়ল।
‘তুমি বিশ্বাস কর কি না কর কিচ্ছু এসে যায় না। সবই এক, এমনই হয়। যেভাবে কুয়োর ঠান্ডা পানিতে একটা বালতি ভরে যায়।’
‘ধরুন ওরা কালোদের দেখে শুধু হাসাহাসি করল, ঠাট্টা করল?’
‘তা তো ওরা করবেই বাবা। এখন যদি কোনো বোকা কালো লোক এসে বলে আমার প্রভু কোথায় তখন আমরা যেমন করে হাসি। আমরা ওকে বলি তুমি তো মুক্ত, আর ওই বোকা কালো লোকটা জানেও না বোঝেও না কিছু, যেমন একটা কুকুরও বোঝে না মুক্তি কি। ওই বেচারা গরীব গাধা লোকটাকে নিয়ে আমরা যেমন হাসাহাসি করি তেমনি স্বাভাবিক এটা। কিন্তু তোমাকে ওই হাসি ঠাট্টা তামাশা সব সহ্য করতে হবে। প্রথমে ওরা তোমাকে মানে প্রতিনিধিকে ইয়াঙ্কি লোকটা যেমন বলেছে তেমনি টাকা দেবে। হয়ত দিনে এক ডলার, তুমি সেই ডলারটা নিয়ে একটা বই কিনবে। তোমার হয়ত তখন ভীষণ ক্ষিদে পেয়েছে একজন অনাহারী লোকের মতো, তবু তুমি বইটা কিনবে। একটা মোমবাতি কিনবে বইটা পড়ার জন্যে। দেখে দেখে চেষ্টা করবে অক্ষরগুলো চিনতে।’
গিডিয়ন মাথা নাড়ল। যতই ব্রাদার পিটার বলতে লাগলেন ততই ওর মনে চার্লস্টনের আসন্ন সম্মেলন নিয়ে আতঙ্ক ভর করছিল। সেই সাথে অবশ্য অদ্ভুত কষ্টকর একটা উত্তেজনাও বোধ করছিল যেমন লেগেছিল ইউনিয়ন আর্মিতে যোগ দেয়ার আগে।
‘আচ্ছা প্রথমে কি রকম বই কিনব?’
‘সে তো ধর একজন পাদ্রী বলবেন বাইবেল কিনতে। কিন্তু বাইবেল তো সহজ বই নয়। এমন খটমটে যে তুমি ঘাবড়ে যাবে। প্রথমে শেখার জন্যে বরং একটা বানানের বই কিনে নিও। তারপর হয়ত একটা অংকের বই। ওই সময়টা তো আসুক তখন তুমি নিজেও বুঝতে পারবে কেমন বই তোমার এরপর লাগবে।
‘হুম’, গিডিয়ন একমত হলো।
‘সব কিছুই কিন্তু আবার বইয়ে পাবে না।’ ব্রাদার গিডিয়ন ভেবে দেখলেন এখন সময় হয়েছে ওকে একটু রাশ টানার।
‘তার মানে কি?’
‘কোথাও কিছু না ঘটলে তো কোনো বই লেখা হয় না। এই যে কালো নিগাররা মুক্ত হলো এমনটি তো আগে ঘটে নি কখনো। এমন কি মুসা যখন তার শিষ্যদের নিয়ে মিসর থেকে বেরিয়ে যান তখনো এমন হয় নি। মুসার কোনো বই ছিল না। তিনি ঈশ্বরের দিকে মুখ ফেরালেন, এখন কি করলে ভাল হবে?’
‘আমি কি করে তা জানব?’
‘গিডিয়ন তোমার মনটাকে ভালবাসা দিয়ে ভরে নাও। সহানুভুতি আর ভালবাসায় ভরে নাও।’
‘আমি তো একটুতে রেগে যাই,’ গিডিয়ন স্বীকার করল।
‘কে না বল? আমরা পাপের ভেতর জন্মেছি তো ভাই। বল তো কে পৃথিবীতে সবচেয়ে বুদ্ধিমান, সপ্রতিভ লোক?’
‘জীবিত না মৃত?’ চিন্তিতভাবে গিডিয়ন জিজ্ঞেস করল।
‘যে কোনোটাই।’
‘আমার মনে হয় বুড়ো এ্যালেক।’
‘হুম… কিভাবে তবে বুড়ো এ্যালেক সব কিছু জানতে পারলেন বল? তিনি বললেন এই বিশাল ভূমিতে কেউ কালো বলে বন্দী নয়। তোমরা মুক্ত।’
‘মনে হয় উনি যা কিছু ঠিক সেসব দেখতে পান।’
‘তা হতে পারে গিডিয়ন। আবার এও হতে পারে যে তার মনটা ভালবাসায় আর দয়া মায়ায় ভরা। ওরা বলে বুড়ো এ্যালেক এমনি ভাবে পাইনের বন থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। তোমার চেয়ে আলাদা কিছুও ছিলেন না। কিন্তু তাঁর মনটা ছিল ওই জমিদার বাড়িটার মতো বড়।’
‘হ্যাঁ বিশাল একটা হৃদয় তাঁর ছিল,’ গিডিয়ন স্বীকার করল।
‘এখন একটা ব্যাপার ভেবে দেখ, কোনো একসময় দুজন লোক দু রকম কথা বলল। একজন খুব সুন্দর দেখতে, ভাল পোশাক, শহুরে চকচকে লোক। সে বলল বাতাস বইছে না, একজন নোংরা ক্ষুধার্ত লোক বলল, চমৎকার বাতাস বইছে, তোমাকে বিচার করতে হবে বাতাস বইছে কি না, কিভাবে বিচার করবে?’
‘আমি আমার নিজের হাত তুলে ধরব, দেখব বাতাস বইছে কি না।’
‘হুম, অথবা লোকদের তা দশজন হোক বারো জন হোক জিজ্ঞেস করবে। কিন্তু কেউ ময়ূরের মতো সুন্দর ঝকমকে হলেই তার কথা বিশ্বাস করবে না। অথবা কেউ সুন্দর করে কথা বলতে জানলেই তার কথা বিশ্বাস করবে না। তুমি এখন পিঠে চাবুকের ওই দাগ নিয়ে সাদা লোকদের সম্পর্কে কিছুতেই ভাল কথা ভাবতে পারবে না জানি। মনটাই শক্ত হয়ে গেছে। ওইসব মানেই দুঃখ আর কষ্ট। সেখান থেকে বেরিয়ে আস। গায়ের রঙে কিছুই যায় আসে না। সবখানেই ভাল লোক বা খারাপ লোক আছে, সাদা আর কাল।’ ,
‘হ্যাঁ তা দেখতে পাচ্ছি।’ গিডিয়ন মাথা নাড়ল।
‘এর বেশি আর কিছু না আমার মনে হয়,’ ব্রাদার পিটারের মুখে চিন্তার ছাপ,‘ ঈশ্বরের আশির্বাদ থাকুক। তিনি তোমার পাশে পাশে হাঁটবেন।’
‘আমেন’, গিডিয়ন বলল।

(চলবে)

পূর্ববর্তী পর্বের লিংক ২

মোবাশ্বেরা খানম বুশরা

জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়, বেড়ে ওঠা ঢাকায়। বাবা মোহাম্মদ মোস্তফা আলী ‘কাশতকার’ ছদ্মনামে জনপ্রিয় ছিলেন কৃষিবিষয়ক লেখালেখির জন্যে। মা মোহসেনা খানম আগ্রহী ছিলেন চিত্রাঙ্কনে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরোজি বিভাগে স্নাতক, মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বেশ কিছু টেলিভিশন নাটকের নাট্যরূপ দিয়েছেন যেগুলো প্রচারিত হয়েছে বিভিন্ন চ্যানেলে। নাট্যরূপ দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের। মৌলিক নাটকও লিখেছেন। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক ও ডীন হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে অবসর জীবন যাপন করছেন। জীবনসঙ্গী : বরেণ্য চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন নাটক নির্মাতা সাইদুল আনাম টুটুল (প্রয়াত)। তাঁদের দুই কন্যা ঐশী আনাম ও অমৃতা আনাম। প্রকাশিত অনূদিত গ্রন্থ : মার্ক টোয়েনের আত্মজীবনী (মূল : মার্ক টোয়েন), নারীর ভাগ্য জয়ের অধিকার (মূল : ম্যারি উলস্টোনক্রাফট), নারী এবং ক্রমবিবর্তিত সভ্যতা (মূল : উইনিফ্রেড হন্টবি), শৈশব, কৈশোর ও যৌবন (মূল : লিও তলস্তয়), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি (মূল : এ জি স্টক)। স্মৃতিচারণ : পাতার কুটির।

Exit mobile version