কুম্ভীপাক
স্বকীয় বালিশ তুমি, ঘুমাও এখন
অনেক তুলোর ভারে, নির্জনতা ব্যাকস্পেসে চেপে
গিয়েছে সূদুর নিরক্ষর দেশে
যে ব্যথা অক্ষরহীন তার ওই মনের গভীরে
কেউ ভুলে ফেলে গেছে অসমাপ্ত লেখা
চৈত্রের হাওয়ায় অবোধ পয়ারে তার উপরতি জাগে
অঘোর বালিশ, তবে ঘুমাও এবার
স্লিপিং পিলের ঘোরে যন্ত্রণাশাবক
কেঁদে ওঠে সুখ চায় বিছানো জগতে
সে যেন শরীর খুলে একা একা নিজের কুম্ভকে
নাভিচক্র সবেগে ঘোরায়, তারপর তোমার দংশনে
বালিশ ঘুমায় আর ক্রমে জেগে ওঠে…
ডিভাইন ওয়াইন
যাবতীয় বধিরতা থেকে নেমে পড়ো
শব্দের পাড়ায়, সরু গলি ধরে কেন ডাকো প্রহেলিকাময়
নিভে যাওয়া মোমবাতি, পাখির পালক
ঝরাপাতা, বৃষ্টির ফোঁটায়, যেখানেই যাও
বিষণ্ণ কবিতাগুলি কবির মৃত্যুকে চেয়ে
ট্রেন লাইনের ধারে মাথা পেতে দেয়
প্ররোচনা আসে, হৃৎধমনিকায় তোমাকে রক্তের
মতো বয়ে চলি, দেহযানে
সেকথা জেনেছ তাও চুপ থাকো,
কালো হয়ে আসে নভশ্চক্ষু, ধীরে ধীরে
অতীত গেঁজিয়ে পাওয়া শুঁড়িখানায় পা রাখো
অনেক অশ্রুতে তৈরি চমৎকার এই মদ
এসো পান করে দুজনেই দ্রবীভূত হয়ে যাই
ময়ূর পালক
জীবন ময়ূর পালক। উড়তে পারে না ভালো তবুও সুন্দর দেখায়। যেখানে যা পাই কুড়িয়ে নিতে ইচ্ছে করে। ছোটখাটো দিন, ছেঁড়া ঘুড়ি, শৌখিন নুড়িকাঁকর, বুকের ভিতর জমানো দুঃখ।
বয়স যত বাড়ে পথ দীর্ঘ হয়। দুরূহ ত্রিকাল আসে। গোধূলি কাঁধে নিয়ে পথের ভিখারি হাত পেতে দাঁড়ায় ব্রহ্মাণ্ডের কাছে। আত্মবিক্রয়ের বিনিময়ে সে পায় ফাঁকা একটা আকাশ, যার নিঃসঙ্গতার ভিতর মরীচিকার আলো, আর এক একটি নক্ষত্র পতনের যন্ত্রণা স্মৃতিদাগ হয়ে ফোটে। অশ্রুমোচনের বনে মর্মরের সুরে গান বাজে
উতল হাওয়ায়। একে একে ভিখারির মুঠি শূন্য করে পাতা ঝরে যায়…
সৌমাল্য গরাই
জন্ম ১ লা জুলাই, ১৯৯৬ সালে বাঁকুড়া জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম নাকাইজুড়িতে। বাঁকুড়া ক্রিশ্চান কলেজে স্নাতক এবং কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিষয়ের স্নাতকোত্তর। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কবি লিখে চলেছেন। তার মধ্যে অন্যতম দেশ, কবিতা আশ্রম, কৃত্তিবাস, শ্রীময়ী, লালমাটি, রুখুডি ইত্যাদি।