পুরোনো বাড়ি, ভেজা কার্ণিশে
পুরোনো বাড়ির চৌকাঠে, আলো লেগে থাকা স্নেহাশিসে
চুপিচুপি দোলে কথা, বাতাসে দোলা লাগা ফিসফিসে
এইখানে যারা ছিলো,যারা থাকে বহুদিনে
তাদের চেয়েও পুরোনো হয়ে ধসে যাবে নিঃশেষে।
প্রথমবার মুখ চেয়ে তার যত কথা অস্ফুটে
কার্নিশে বসা বিকেল বাদ্য বাজায় ব্যাকফুটে
বৃষ্টি এলে তুমি, দূরের কোনো গ্রামে
পায়ের তলার মাটি ভিজছে চুপিসারে
বায়না করা ছাতা আয়না দেখা মুখ
হারিয়ে খোঁজ কাকে?
কোনো এক সন্ধ্যায় উঁচু-নীচু কিছু গাছের ফাঁকে
তোমার সাথে দেখা হলে
কোথাও গিয়ে নদী থামে?
এমনও তো দিন আসে, তোমার কথা দূরের কোন গাঙে
সন্ধ্যা হয়ে নামে।
জোছনা কল্লোল
চাঁদ মাখানো ভাত খাওয়াবো
মেঘ মেশানো চা
উঠোন কোণে রুয়ে দেবো
বেলেম্বু করমচা।
চুমু খেতে ছল করবো
জড়াতে আহ্লাদ
ন্যাকা হবার ওমন বয়স
প্রেম যার চিরকাল।
সন্ধ্যে কুপির সলতে জ্বেলে
মাপবো দুজন চাল
ঘরের পাশে কলমি ডগা
উনুনে ভাজবো তা।
আয়েশ করে ভাতের থালে
নামবে যখন চাঁদ
আমরা দুজন কলকলিয়ে
মাখবো জোছনা।
কাঠ চেড়াইয়ের শব্দ
পেল্লাই কাঠ চিড়ে বেড়িয়ে যাওয়া পেরেক
ব্যথা তেমন, যেমন ফুল ফুটে আছে মর্ম বুদবুদে
নৈশলিপি নামাঙ্কিত, প্রেতহাড়ের গভীর
ভেঙেছে নদীর দু’কুল, পার হবার সুষমা পলির মোলায়েম
বীজ বুনে দিলে শাঁখায় নাচবে ক্রিং ক্রিং বেল
আমরা পুরোনো ইস্কাপন,ফাটল ধরা প্রাচীর
খসে খসে চুনকাম ধরে আছি জীর্ণ অলঙ্করণে
এসো, গান গাও, নর্তকীর দেহ ঘিরে রহস্যের মাঁচা
ভেদ করো জীবন সন্ন্যাস
তীর চিরকাল অর্জুনের লক্ষ্যভেদী হবে এমন তো নয়!
অসহায় মীনের ভাগ্য ছেদ করে
তোমাকে নিয়ে চলে যাব পাহাড়ে
যে পাহাড়ে পাখি হয়ে উড়ছে
অন্যদিনের ভাবনা।
অনুভব আহমেদের বসবাস ঢাকায়। কবি। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ দুটি।