নাসির আহমেদ
ছন্নছাড়া
আমার কিছু সুখের স্মৃতি এবং রক্তক্ষরা হৃদয়
জড়িয়ে ছিল যাদের সঙ্গে দারুন মহীয়সী তাঁরা –
আমার জীবন পূর্ণ করে কানায় কানায় ভরিয়েছিলেন
এবং ভীষণ রিক্ত করে নৈঃসঙ্গ্য চিনিয়েছিলেন তাঁরাই।
সম্ভ্রান্ত তাঁরা ভীষণ ,আজও গহন ঘোর কুয়াশায়
শীতসকালের সূর্য যেন হঠাৎ খুশির একটু ঝিলিক
ছড়িয়ে যায় বাদলরাতে কিংবা একা ভরদুপুরে।
তাঁদের স্মৃতি বহু যুগের ওপারে আজ অস্পষ্ট।
হঠাৎ দেখি শ্রাবণরাতের মুষলধারা বৃষ্টি চিরে
এই শহরে আশ্রয়হীন ঘুরছে আমার সম্ভ্রান্ত প্রেমিকারা!
গভীর রাতে দরজায় কেউ টিপতে থাকে কলিংবেলও।
এতকালের একাকিত্বে ক্ষয়ে গেছে সেই কবেকার তরুণ কবি,
অস্পষ্ট মুখচ্ছবি তাদেরও তো। হায়রে আমার ছন্নছাড়া প্রেম!
চকচকে নোট বুক পকেটের এখন ছেঁড়া বিবর্ণ প্রায়
ময়লা টাকার মতই যেন নাম লেখা নোট ফিরে পাওয়া!
ভীষণ মায়া : কোথায় ছিলি হতচ্ছাড়া বেপথু প্রেম,
ঘরছাড়া প্রেম ফিরলি কেন?
মন বলছে__ এলোই যখন দাও না খুলে ঝড়ের রাতে
দরজা তোমার, দাওনা কবি, আসলো যখন বসতে তো দাও!
বিষাদচাষী
রিমঝিম আহমেদ
আপনাকে ডাকোনি তুমি
বলোনি, উত্তাপে মিশে নেই কোনো জল
আগুন পড়ায় শুধু
আলিঙ্গন কিছু থাকে আগুন, প্রবল
চৌকাঠ পেরিয়ে বুঝি
ঘর বলে কিছু নেই, ঘরছাড়া হলে
হৃদয় বিষাদচাষী
কীঠকেও মিশিয়ে দেয় ফুলের দলে
ভ্রান্তি নিমীলিত হাওয়া
কিছু দাগ রেখে গেল আশ্বিনের ফুলে
ডানারও বয়স বাড়ে
ওড়ার বাসনা তবু থাকে বাহুমূলে
মাছজীবন
শামীম হোসেন
যারা যারা হেঁটে গেল তারা কেউ ফেরেনি তাহলে
ওই জঙ্গলে কার পা, ধানখেতে কার হাত
ইশারায় ডেকেছে তোমাকে?
যারা যারা ফিরে এল তারা কেউ যায়নি জঙ্গলে
নামেনি জলে, রক্তের বুদবুদ জড়িয়ে
আমি কেবল
বড়শিতে ঝুলে আছি ভাতুড়িয়া বিলে।