প্রথম প্রণয়
বিস্মরণ রৌপ্যমুদা ঝনাৎ শব্দে ঝরে পড়ে যায়
আমি খুঁজে ফিরি অকারণ প্রথম প্রণয়।
এখনও ট্রামের মতো ধীরে ধীরে মাটি কাঁপিয়ে
ধক ধক শব্দে সে চলে যায়
আর বুকে খুব ব্যথা করে ওঠে, অপমানিতের কষ
এই মহাবৈধব্য
চণ্ডাল-তরণী, আর কিছু দিতে নাহি পারে
শোকের মর্মরে শুধু অস্ত যায়
দৈবাৎ পাবকে।
অশ্রুত মুকুরে দেখি অনাহত ঋণ –
আজ আর কি বা ভয়,
স্বপ্নের।
হঠাৎ করে চমকে দেখি আরে
ভুল বানানে নাম লিখেছি তারে।
ভৌতিক কবিতা
যে কোনো স্বপ্নেরই একটা শেষ আছে, গল্পে মতো। কল্পনায়ও
দেখা যেতে পারে শণিগ্রহের বলয়ের উপর স্থির বরফ যেন
সেখান মুনি-ঋষিরা বসে ধ্যান করছেন।
যেমন এপাড়ায় যখন বোম্বিং শুরু হতো ঠিক তখনই হয়তো
অমল-দা ফ্যানের কোমল হাওয়ায় সুখে,
বাবলি-টুম্পাদের বাড়িতে বসে চা-খাছেন আরাম করে–
দেখে কে বলবে তার হাসির কোণায় স্পিন্টার, মোমছাল, সোরা ও গন্ধক।
কবিতায় জল মেশাও কি মদ ঢেলে দাও, অথবা বাতাস –
আসলে ভূতের মতো শব্দের চকিত ছায়া
সাৎ করে সরে না গেলে বিপ্লবই হয় না তো পাঠকের
মর্মে এসে প্রবেশ করা অনেক দূরের কথা!
মরকত-কুঞ্জের ভিতরে বসে প্রেম করা ও রক্তজলঅশ্রুময় রাজনীতি
আসলে একই কয়েনের দুই পিঠ।
মাংস রান্নার গন্ধ পেলে সবারই যেমন খিদে পেয়ে যায়
হিংসা হলে তার পৃথিবীতে সুন্দর, সুশ্রী
বলে আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না, নরকের পাঁক ও অগ্নি
একটু একটু করে তাকে দহন করে চলে যাবে।
কোথায়?
কারণ এরপর সত্যি সত্যিই একটা কবিতার জন্ম হবে –
তাকেই আমরা বলি ভৌতিক কবিতা।
হ্রস্ব-উ আর দীর্ঘ-উ
নোংরা পাথর, বৃহস্পতির
হাঁটতে হচ্ছে অনুস্বরে –
বিসর্গে নীল রক্তভেজা অন্ধ-রুমাল
চন্দ্রবিন্দু খুঁত ধরেছে অল্প ক্ষতে!
চটির নিচে পারদ, তাহার মুখ ঢেকে যায়
স্ব-আয়নায়, কাশির শব্দ, এ শহরেই
আসলেই যদি নিচু হয়েই বাঁকা ও লেখার ভর্ৎসনাতে!
সেখানেও কি এই নদীটিও ছিলো এমন শ্রীময়ী আবার সুশ্রী?
তুমি মানলে না কবির আঙুল
স্পর্শ করে না অপমান ছাই, কাক
ডেকে ওঠে ভোরবেলাতেই মাখনের মতো
চামচে করেই তুলে এনেছিলো এই লেখা –
যদি বিশ্বাস করো, হিংসায়, ট্যারা
চোখ দিয়ে তার সবটাই আমি কি দেখেছি?
টিনের মতোই ভাঙা মন, কুটিল-চিন্তা, অশ্রু –
ঘৃণা করি যশ, অহংকার, বমন করেছি
কুশ্রী মদিরা রাত্রে, চশমা চোখের কানা দুইজন দস্যু।
অন্ধকারের শিবলিঙ্গে নিজেই নিজেকে পুজো দেয়
তারা হ্রস্ব-উ আর দীর্ঘ-উ।