বাংলাদেশ থিয়েটার
এখন পর্যন্ত গ্রুপ থিয়েটার চর্চাই আমাদের এখানে থিয়েটারের মূলধারা। এর ফাঁকে ফাঁকে মাঝেমধ্যে বিকল্প নানা প্রয়াস চলছে বটে, তবে তা এখনো অন্য একটা পথ অনুসন্ধানের মধ্যেই আছে, সেটা ধারাবাহিক বা লাগাতার কোনো চর্চা হয়ে ওঠেনি এখনো। বাংলাদেশ থিয়েটার বিশেষ আয়োজনের লেখা পড়ছেন।
গ্রুপ থিয়েটার চর্চাটা এমন যে, কোনো একজন বা দু-তিন জনের উদ্যোগে একটি নাটকের দল গড়ে উঠেছে এবং তার বা তাদের নেতৃত্বে দলটি পরিচালিত হচ্ছে এবং সেখানে একটি সাংগঠনিক কাঠামো আছে। এ দলের মূল কাজ নাটক নির্মাণ ও মঞ্চায়ন। এই নাটক নির্মাণ ও মঞ্চায়ন করতে গিয়ে দরকার হয় আরো মানুষ- আরো লোকজন, তাই লোকজন যোগাড় করা হয়েছে বা লোকজন এসে এখানে জড়ো হয়েছে। এরা সবাই স্বেচ্ছাসেবী।
সাধারণত দলে নতুন সদস্যের প্রয়োজন পড়লে একটি প্রচারণার মাধ্যমে দলে সদস্য আহ্বান করা হয়। এই নতুন সদস্যভুক্তির জন্য ছেলেমেয়েরা আবেদন করে, সেখান থেকে মৌখিক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে নির্বাচন করে একটি সংক্ষিপ্ত ট্রেনিংয়ের (কর্মশালা) ব্যবস্থা করে তাদেরকে দলভুক্ত করা হয়। এভাবে যারা আসে তারা সকলেই মূলত তরুণ। এই তরুণেরা দলে ঢুকে তাদের অধিকাংশই বুঝে উঠতে পারে না যে তারা কী করছে, কী করবে, কীভাবে চলবে। অনেকটা খাচ্ছি-দাচ্ছি-দাঁড়ি কামাচ্ছির মতো অবস্থা। গড়বড়ের সূচনা এখান থেকেই। তারা দলে আসে, হৈ চৈ আনন্দ করে, আড্ডা দেয়া, সময় কাটানোর ভালো একটা জায়গা যেন খুঁজে পায়। এভাবে আসা-যাওয়া করতে করতে অনেকে আবার অনিয়মিত হয়ে পড়ে, কেউ কেউ ঝরে যায়।
এর মধ্যে যারা রয়ে গেল বা টিকে গেল তারা কী করছে? আসছি-যাচ্ছি-থিয়েটার করছি ব্যাস, কেটে যাচ্ছে দিন। চলে যাচ্ছে সময়। যেতে যেতে অনেকগুলো বছর। একসময় পিছন ফিরে তাকানো, হতাশ! দলের উপর বিরক্তি, বিরক্তি নিজের উপর। কী পেলাম থিয়েটার করে!
হতাশা আসবেই যদি দলে ঢোকার শুরুতেই নিজের প্রতি নিজেই বিশেষ একটা দৃষ্টি না রাখা হয়। তবে হ্যাঁ, একেবারে শুরুতেই হয়তো সবকিছু বুঝে ফেলা যায় না। কিন্তু দু-চার বছরের মধ্যেই অনেকখানি বুঝে ফেলা দরকার। আর শুধুমাত্র নিজের প্রতি দৃষ্টি রাখাই নয়, মাথার মধ্যে দল বা থিয়েটারের অনেক বিষয় পরিষ্কার থাকাও জরুরি।
প্রথমেই দেখা যাক নিজের প্রতি দৃষ্টি রাখার বিষয়টি। যারা থিয়েটার করতে আসে তারা মূলত অভিনয়টাই করতে আসে, সে অভিনেতা হতে চায়। দলে প্রবেশের সময় যে ট্রেনিং বা কর্মশালা হয় সেখানেও থিয়েটার সম্পর্কিত নানান বিষয়ের মধ্যে অভিনয় বিষয়টাকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। দলে ঢোকার পরও অভ্যন্তরীণ কর্মশালা হয় মাঝে মাঝে। এইসব কর্মশালায় আমি যা শুনছি, শিখছি, তা মাথায় রাখছি কি? রাখছি না। নিজেকে অভিনেতা হিসেবে গড়ে তোলার জন্যে যেসব নিয়মিত অনুশীলন করার কথা তা করছি কি? না, করছি না। কর্মশালা করছি-শিখছি-ভুলে যাচ্ছি। ব্যস। কেউ যদি নিয়মিত অনুশীলন না করে তাহলে সে যোগ্য হয়ে উঠবে কীভাবে? কেননা যখন আমি দলে ঢুকছি তখন তো আমি তেমন যোগ্য নই। অনেক খামতি নিয়েই আমি দলে ঢুকেছি, কিন্তু সেই খামতিগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে না?
অনেকের অনেকরকম সীমাবদ্ধতা থাকে। কারো শরীর নমনীয় নয়, কণ্ঠস্বর জোরালো নয়, উচ্চারণ ভুল-ভাল, এক্সপ্রেশন আসে না, কারো দমে ঘাটতি, শারীরিক সক্ষমতা কম, তাল-লয় বুঝে উঠতে না পারা, গাইতে পারলেও সুর ছুটে যায়, মনোসংযোগ করতে জানে না। এমনি নানান সীমাবদ্ধতা নিয়ে আমরা থিয়েটার করতে নেমে পড়ি, সেটা হয়তো দোষেরও নয়। কিন্তু অভিনয় করতে এসে এইসব সীমাবদ্ধতা তো কাটিয়ে উঠতে হবে, কাটিয়ে না ওঠাটাই দোষের। কীভাবে কাটিয়ে উঠতে হবে সেসব তো দলে শেখানো হয়। এখন অভিনেতার দায়িত্ব সেসব শেখা বিষয়াদি অনুশীলন করে করে খামতি বা সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলা। এ অনুশীলন দু-এক মাসের বা দু-একটি নাটকের জন্য নয়, চলমান একটি বিষয় সারাজীবনের জন্য। নিজেকে নিজেই গড়তে হবে। ব্যক্তিগত উৎকর্ষ মূলত ব্যক্তিকেই অর্জন করতে হবে।
এছাড়া দলে আসা-যাওয়া করতে করতে, অভিনয়ে-মহড়ায় অংশ নিতে নিতে বা মহড়া দেখতে দেখতে প্রতিনিয়ত কিছু কিছু শিখে ফেলা যায়। একসময় যদি থিয়েটারের অন্য সৃষ্টিশীল বিষয়েও আগ্রহ জন্মায় – যেমন মঞ্চসজ্জা-আলো-পোশাক-মেকাপ-সঙ্গীত-রচনা-নির্দেশনা… সেসব বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে। তবে সিদ্ধান্ত নিলেই তো হবে না, অভিনয়ের মতো সেসবেরও প্রস্তুতি বা অনুশীলনের বিষয় আছে। আর নিজের সম্পর্কে নিজের একটা স্বচ্ছ ধারণা থাকা খুব জরুরি। অর্থাৎ নিজের সাথে নিজের বোঝাপড়া। আমরা নিজের সম্পর্কে সবসময় একটা সুউচ্চ ধারণা পোষণ করি, তা না করে আমি কী পারি, কতটুকু পারি, কী পারি না, অন্যের সাথে আমার তফাৎ ইত্যাদি বিষয়ে সঠিক একটা পরিমাপ থাকা দরকার। অর্থাৎ নিজেকে জানতে হবে। অনেকে কাস্টিং না পেলে মহড়ায় আসে না। মহড়া দেখে দেখেও একজন অভিনেতা অনেককিছু শিখে ফেলে। অতএব নিয়মিত মহড়া দেখা প্রয়োজন। অনেকের থিয়েটার দেখার অভ্যাস গড়ে ওঠে না। প্রচুর থিয়েটার দেখতে হবে। প্রচুর থিয়েটারের মানুষদের সাথে মিশতে হবে, বন্ধুত্ব করতে হবে, আড্ডা দিতে হবে। একজন থিয়েটার কর্মীর জন্যে বেশি জরুরি ‘আমি জানি না, জানতে চাই’। গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতে হবে, শিখে নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে, নিজেকে তৈরি করার দৃঢ় মানসিকতা।
এসব তো গেল মূলত অভিনয়-অভিনেতা বিষয়ক। এবার অন্যদিকে দৃষ্টি ফেলা যাক। যারা থিয়েটার করতে আসে তারা অনেকেই অভিনয় ছাড়া অন্য বিষয়ে মনোযোগী বা আগ্রহী হন না। কিন্তু অভিনয় ছাড়াও তো দলে অনেক কাজ থাকে। সেট নির্মাণ, টিকেট বিক্রি, দর্শক বসানো, মঞ্চসজ্জা বা অন্যান্য মালামাল মিলনায়তনে নিয়ে যাওয়া, প্রদর্শনী শেষে সেগুলো খুলে জড়ো করা, তা গোডাউনে রেখে আসা, মহড়াকক্ষ ঝাট দেয়া, চা-নাস্তার আয়োজন, মহড়ার আয়োজন, ব্যানার লাগানো, বিজ্ঞাপন দেয়া, প্রচারের অন্যান্য আয়োজন ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব কে করে দেবে? এটা কোনো গল্প-উপন্যাস বা সংগীত না যে একা একা বা দু-তিনজন মিলে করে ফেলা যায়। প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে এটা কোনো কোম্পানি নয়, এটা একটা সংগঠন। এখানে সাংগঠনিক মানসিকতা খুব জরুরি। এখানে সমস্ত কাজ করা হয় স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে। তাই এসব কাজ বা দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিতে হবে অবশ্যই। সময়ানুবর্তিতা ও অন্যান্য ডিসিপ্লিন মেনে চলতে হবে। ভাবতে হবে আমার কারণে যেন অন্য কারো অসুবিধা না হয়। তুমি উদাহরণ হিসেবে নেবে দলের মধ্যে কে নিয়মানুবর্তী তাকে, কে সময়ানুবর্তী তাকে, কে সৃজনশীল, কে পরিশ্রমী, কার চিন্তাভাবনা ইতিবাচক- তাকে। বিপরীত কাউকে নয়। এসব ব্যাপারে নিজের বুদ্ধি-বিবেচনা থাকতে হবে বা বুদ্ধি-বিবেচনা গড়ে তুলতে হবে।
দলে প্রবেশের পরই আস্থা তৈরি করে নিতে হবে। ওপরওয়ালাদের সঙ্গে খাতির রেখে নয়, আস্থা তৈরি হয় নিজের কাজ দিয়ে। এটা কোনো লোক-দেখানো ব্যাপার নয়। সাংগঠনিক কাজকর্ম তো করতেই হবে, কিন্তু সংগঠনচর্চার দিকে ঝোঁক নয়, থিয়েটার চর্চার দিকেই মনোযোগী হতে হবে। সৃজনশীলতা বুঝতে হবে, ওই স্তরে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হবে। দলে যারা বেশি বেশি সময় দিচ্ছে, শ্রম দিচ্ছে, মেধা দিচ্ছে, তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল ও শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয়, কৃতজ্ঞ থাকতে হয়। দলের আর্থিক ব্যবস্থাপনা কীভাবে সামলানো হয় তা খেয়াল করা ও বোঝার চেষ্টা করতে হবে। অর্থাৎ এসব কাঠামো অন্তর দিয়ে অনুভব করতে হবে, হৃদয়ঙ্গম করতে হবে। আরেকটি কথা— স্বৈরাচারী ব্যবস্থা সবসময় নিন্দনীয়, ভয়ঙ্কর, বিধ্বংসী। কিন্তু স্বৈরাচারী না হলেও অবাধ গণতন্ত্রের জায়গাও নয় থিয়েটার। থিয়েটার করতে এসে ক’দিন পরেই ভেবে বসি দল আমাকে কী দিল, কিন্তু তারচেয়ে আরো বেশি ভাবা দরকার আরও গুরুত্বপূর্ণ এই ভাবনা যে, আমি দলকে কী দিলাম।
দলে প্রবেশের পর সে যদি সেখানে কোনো আনন্দ না পায়, তাহলে সে যেন দল না করে। কোনো দলে প্রবেশের পর তার যদি মনে হয় এমনটি নয়, আমি আরও বেশি বেশি কিংবা আরো ভালোভাবে থিয়েটারটা করতে চাই, তাহলেও তার সেই দল ছেড়ে আরও ভালো কোনো বা আরও ব্যস্ততম কোনো দল খুঁজে নেয়া উচিত। কেউ বহুদিন থিয়েটার করবে কি না, তা দু-এক বছরের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে হবে, কেননা তার সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভর করছে তার সামনের দিনগুলির পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি।
সদস্যদের মধ্যে সবাই যে একেবারে আনকোরা নবীন থাকে তা নয়, কখনো কখনো জানা-শোনা বা অপেক্ষাকৃত যোগ্যতাসম্পন্ন ছেলেমেয়েও আসে, তাতে দলের সুবিধাই হয়। কিন্তু কখনো কখনো এমনও হয়, সে তার বন্ধুদের সঙ্গে বা দলের সদস্যদের সামনে সেটা জাহির করে। সে বোঝাতে চায় তার অনেক জানাশোনা, সে অনেক যোগ্য। কিন্তু তারও দৃষ্টি খোলা রাখতে হবে – এখানে আর কে কে যোগ্য। জানাশোনা দিয়ে দলকে সমৃদ্ধ করতে চাইবে, কিন্তু জাহির করবে না। ধীরে ধীরে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলে দলই তাকে সমীহ করবে। অনেকের উন্নাসিকতা থাকে দল বা দলের কাজকর্মের প্রতি, অথচ ভাবে যে দল আমাকে বুঝলো না, তাহলে তাকে বোঝে এমন কোনো দলে তার চলে যাওয়াই উচিত। কারো আবার প্রবণতা থাকে কর্তৃত্ব দেখানো কিংবা দুর্ব্যবহার করার। কিন্তু প্রবণতা হওয়া উচিত কর্তৃত্ব অর্জন করতে না চেয়ে বন্ধুত্ব অর্জন করতে চাওয়া। কারো প্রতি অবজ্ঞাসূচক মনোভাব প্রকাশ না করে সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে। একটুখানি যদি মতের অমিল হয় তাহলে সে আমার শত্রু হয়ে গেল না। নানান জায়গার নানাজন এসে একটা দলে মিলিত হয়। তাদের ভিন্ন রুচি, ভিন্ন অভিজ্ঞতা, ভিন্ন ভিন্ন ভাবনা। এই সকলের সমন্বয় করে সুশৃঙ্খলভাবে চলাই সংগঠনের বৈশিষ্ট্য।
অল্পদিনেই নিশ্চয় বুঝে ফেলা যায় যে থিয়েটারের জন্য প্রচুর সময় দিতে হয়। থিয়েটার যেহেতু নিয়মিত কাজের একটি ব্যাপার, নিয়মিত দলে আসতে হয় তাই অন্যান্য পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠান মাঝে মাঝেই বর্জন করার প্রয়োজন পড়ে, পড়বে। বিকালে ছাদে ক্যারাম না খেলে, মহল্লার আড্ডা বাদ রেখে, বন্ধুদেরকে ছেড়ে এসে থিয়েটারে আসতে হয়, প্রিয় অনেক কিছুই পুরাতন হয়ে যায়। এখানে অর্থপ্রাপ্তির কোনো সম্ভাবনাই নেই বরং পকেট থেকে আরও যায়। প্রাপ্তির তুলনায় পরিশ্রমও অনেক বেশি। তবে কোনো কাজে আনন্দ খুঁজে নিলে সেই কাজ সহজ ও সুন্দর হয়ে ওঠে।
থিয়েটারে কিন্তু তোমাকে ডেকে আনা হয়নি, তুমি নিজেই এসেছো। আমাকেও ডেকে আনা হয়নি। আমি-তুমি-আমরা স্বেচ্ছায় এসেছি। এসেছি এবং সময় দিচ্ছি নিয়মিত। এভাবে অনেক অনেক সময় চলে যাচ্ছে আমাদের জীবন থেকে। কিন্তু আমরা যেন খেয়াল রাখি এই সময়টুকু ফলপ্রসূভাবে দিচ্ছি তো? আমি আমার অনুশীলন-চর্চা ঠিকঠাকভাবে করছি তো? উচিত থিয়েটার করতে করতে কোনো না কোনো দক্ষতা অর্জন করে ফেলা, তাহলেই আর হতাশা প্রশ্রয় পাবে না, প্রশ্রয় পাবে না অপ্রাপ্তির গ্লানি।
আরেকটা ঝামেলাও হয় থিয়েটার করতে এসে। সে দিকটাও খেয়াল রাখা দরকার। থিয়েটার যে একটা ‘গুরুত্বপূর্ণ বিষয়’ এবং এটা যে একটা কাজ, সেটা আমরা আমাদের পারিপার্শ্বিক সমাজ বা বৃত্তকে বা পরিবারকে বোঝাতে ব্যর্থ হই। ব্যর্থ হই বোঝাতে যে, এ কাজটাও সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অন্যের সাথে বোঝাপড়ার এ ব্যর্থতা পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা নাও যেতে পারে, হয়তো। কিন্তু থিয়েটার বিষয়ে নিজের বোঝাপড়ায় যেন খামতি বা শূন্যতা না থাকে।
প্রশান্ত হালদার : কবি, নাট্যকার ও অভিনেতা