তীরন্দাজ Blog কবিতা দুটি কবিতা | পার্থজিৎ চন্দ | কবিতা | রাত দখল
কবিতা বিশেষ সংখ্যা

দুটি কবিতা | পার্থজিৎ চন্দ | কবিতা | রাত দখল

Kanishka

প্রিয় পাঠক, আমাদের এই ভূখণ্ডে ‘জুলাই আন্দোলনে’র কিছুদিন পরেই সীমান্তের ওপারে শুরু হয় ‘রাত দখল’-এর আন্দোলন। জুলাই আন্দোলন নিয়ে তীরন্দাজ একটি বিশেষ সংখ্যা করেছে। এরপর ইচ্ছে ছিল ‘রাত দখল’ নিয়ে একটা বিশেষ সংখ্যা করবার। সেইভাবে লেখকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তারা লেখাও দিলেন, অনেকের কাছ থেকে লেখা পাওয়ার প্রতিশ্রুতিও পেলাম। কিন্তু এর মাঝে হঠাৎ করে তীরন্দাজ-এর ওয়েব সাইটটিতে প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দিল। থমকে গেল প্রকাশনার কাজ। অবশেষে সেই সমস্যা কাটিয়ে সংখ্যাটি লেখকদের সামনে হাজির করতে পেরে আমরা আনন্দিত। সময় মতো প্রকাশের প্রতিশ্রুতি আমরা রক্ষা করতে পারিনি বলে সীমান্তের ওপারের লেখক বন্ধুদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করছি। সংখ্যাটি কেমন লাগল, আমাদের জানাতে ভুলবেন না। চিঠি লেখার ইমেইল অ্যাড্রেস : eteerandaz@gmail.com
সবার জন্যে শুভকামনা।

স্থলভূমে প্রথম সেলাইমেশিনের পাশে আমি ঘুমিয়ে ছিলাম
লক্ষ ভোল্ট তড়িৎ-সংযোগ শেষ। সাজানো বাল্বের সার
জাদুদণ্ড দিয়ে কেউ জ্বালাতে জ্বালাতে চলে যাচ্ছে দিগন্তের কাছে
আঙুল ঠেকিয়ে দু’ভাগ করছে জলের চাঁদোয়া
সূর্য ফুটছে, তারা ফুটছে। নিজেকে আঁকড়ে ধরে সে
আকাশে উড়িয়ে দিচ্ছে স্তন্যপায়ী পাখিদের ডানা; গিরিখাদ
কালো, অন্ধকার গাছ। ধারাস্রোত। ম্যাগমা-ছুরিকা
আগুন-নদীর দু’পারে ফুটিয়ে তুলছে তন্দ্রা ও তুন্দ্রার
প্রতিসম রাতের বাগান

স্থলভূমে প্রথম সেলাইমেশিনের পাশে আমি ভোর ভোর উঠে
সেই কবে থেকে রিফু করেই চলেছি। কত চুমকির ভেতর দেখছি
চাঁদ, সূর্য, তারা ঝলসে উঠছে। পাখি উড়ে গিয়ে ঠোঁটে করে
ধরে আনছে রোহিনী, আশ্লেষা, মঘা। ঘুমে ঢুলে যেতে যেতে
তোর জামার ঝালরে তাদের বসিয়ে দিচ্ছি হেমসেলাইয়ের ফাঁকে

আজ সেই বাবার কাছেই ফেরা। রিফু করা ধ্বস্ত শরীর
আমি সেলাইদক্ষ বাবা… সেলাইমেশিন চালাতাম… আয়, তোর
হৃৎপিণ্ড, কলিজা, অন্ত্র আর মণি ছুড়ে দিই ছায়াপথে
ঈশা্ন, অগ্নিতে

সেনাপতি ঘুমিয়ে পড়েছেন। তাকে পাহারায় থাকা কোতোয়াল
ঘুমিয়ে পড়েছে। কোতোয়াল ঘুমিয়ে পড়লে তার সুরক্ষায় থাকা
দীনদরিদ্র্য সৈন্যের জেগে থাকার কোনও মানেই হয় না,
অতএব, সে’ও ঘুমে।
শুধু, জেগে আছে এক মৃতনগরীর রাজা
তাকে গান শোনাচ্ছে তক্ষক, নাচ দেখাচ্ছে বিষধর
অনুগত একজন ধুকপুক করা একতাল নারী-মাংস নিয়ে এলে
তিনি বললেন, ‘আমি মৃতদেহ ছাড়া ধর্ষণ করি না…’

ধীরে ধীরে সৈন্য ও কোতোয়াল জাগলেন। সেনাপতি জেগে
দেখলেন কী দারুণ সকাল। শুধু সারা দেশে সামান্য বিপ্লব
রাজবৈদ্য ও বিচারক প্রস্তুত ছিলেন, সন্তানের মাথায় হাত রেখে বললেন,
‘যার ইচ্ছা-অনিচ্ছা কোনওটাই নেই তার সঙ্গে
এমনকি ধর্ষণও অসম্ভব…’

Exit mobile version