লেখাটি পড়তে ৫ মিনিট লাগবে
এর আগে অনূদিত স্ক্যান্ডিনেভীয় কবিতার প্রথম গুচ্ছটি প্রকাশিত হয়েছিল। এবার প্রকাশিত হলো দ্বিতীয় গুচ্ছ। এতে সংকলিত হলো কবি সুব্রত অগাস্টিন গোমেজের অসামান্য অনুবাদে সুইডেন, ফিনল্যান্ড ও আইসল্যান্ডের ১০ কবির কবিতা।
কারিন বোয়ে
(সুইডেন – ১৯০০-১৯৪১)
আমি করতে চাই মোকাবেলা…
অস্ত্র-হাতে বর্মে-ঢাকা এসেছিলাম আমি
গর্জাতে-গর্জাতে—
ঢালটা আমার ছিল ঢালাই-করা
ভয়ে ও লজ্জাতে।
ছুঁড়ে ফেলতে চাই এ-তরবারি
বর্শা খরতর।
এমন কঠিন রণসজ্জায় আমি
হ’য়ে গেছি বরফ।
দেখেছি আমি শুকিয়ে-যাওয়া বিচিরা অবশেষে
হয়েছে অঙ্কুরিত।
দেখেছি আমি দীপ্ত শ্যামলতা
ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত।
লোহার চেয়ে অনেক শক্তিশালী
প্রাণের সজীবতা,
এই পৃথিবীর গভীর থেকে প্রতিরক্ষাহীন
উঠে এসেছে তা।
ফাগুন জাগে তুহিন মাঘে, যেখানটিতে জ’মে
ছিলাম এতদিন।
আজকে আমি প্রাণ-বাহিনীর করব মোকাবেলা
অস্ত্রশস্ত্রহীন।
(Karin Boye, I Want to Meet…)
রাতের গভীর চেলো
তেপান্তর পার ক’রে ছুঁড়ে দেয় আঁধার রভস।
বস্তুজগতের ঝাপসা ছবিগুলি ক্রমশঃ মিলায়
বহির্জগতের নানা আলোকধারায়।
আদিগন্ত ভাতিমান্ সাগর-জোয়ার
ঢেউয়ের উপরে ঢেউ ভেঙে চলে রাত্রিনীল অনন্ত-অবধি।
তুমি! তুমি! তুমি!
ওজনবিহীন, ভোল-পাল্টানো পদার্থ, তুমি স্পন্দনের স্ফোটমান ফেনা,
সদা-ঊর্ধ্বগামী, মাথা-ঘোরানো স্বপ্নের স্বপ্ন সে-যে,
চোখ-অন্ধ-ক’রে-দেওয়া সাদা!
আমি এক সিন্ধুচিল, জিরানো, ছড়ানো ডানাটিতে
সৈন্ধব-লবণ তুষ্টি করি পান
যতদূর জানি আমি, তারও পূর্বে আরও,
যতখানি চাই তারও সুদূর পশ্চিমে,
আর পাখা ঘ’ষে যাই ব্রহ্মাণ্ড-হৃৎপিণ্ডে—
চোখ-অন্ধ-ক’রে-দেওয়া সাদা!
(Karin Boye, The Night’s Deep Violoncello)
এভা লীসা মানের
(ফিনল্যান্ড – ১৯২১-১৯৯৫)
কাসান্দ্রা ২
কেমন মরণ এটি আমাকে যা দিল নাস্তির তিতিক্ষা
বস্তুগত অবসাদ যে-বোঝা এড়াতে আমি চাই
আমাকে বিষণ্ণ করে, এরকম জ্ঞান
এক নির্দেশনা যাকে পাঠ করতে পারে না প্রকৃতি
কেমন মরণ এটি আমাকে যা দিল শিকোয়ার আগেই জবাব
কেমন মরণ তার লব্জগুলি লিখে গেল আমার মগজে
কেমন মরণ-লাগি আমি জিয়ে আছি?
জীবনের কী এ-বিপরীত কেননা এ-জীবন-তো নয়
জীবন লালসা আর তাকত অপিচ মৌজ-মাস্তি
সুন্দর যেন-বা কোনো চাবুক-তাড়িত পাগলা-ঘোড়া
মিউজের গিরিশীর্ষে এক ম্যাসিডনীয় আরোহ
অ্যাথেন্স যখন ধ্বংসস্তূপ।
(Eva Liisa Manner, Kassandra II)
কাসান্দ্রা : হোমারের ইলিয়াদ কাব্যে ট্রয়ের চিরকুমারী, তপস্বিনী রাজকন্যা। কাসান্দ্রা ভবিষ্যৎ দেখতে পেত, কিন্তু অ্যাপলোর অভিশাপে, তার কথা কেউ বিশ্বাস করত না, ফলে ট্রয়-যুদ্ধে তার পরিবার আর দেশের সর্বনাশ হবে এটা সে বলেছিল, কেউ পাত্তা দেয় নি।
মির্কা রেকোলা
(ফিনল্যান্ড – ১৯৩১-২০১৪)
আমার জায়গায়
নিরন্তর আমার চোখে একটা বাজপাখির ছায়া পড়ে।
আমি হঠাৎ-ছোঁ-এর ভয়ে ভীত,
বাঁধাকপির পাতায়-মোড়া আমি-তো নই, প’ড়ে
রয়েছি সরু-সরু গুঁড়ির ভিতর।
আমি বলছি অনেক চোখা-রেখা
চলেছে খেলে আমার আশেপাশে
উড়তে হবে তাদের দূরাকাশে
এবং আমি থাকব প’ড়ে একা
ছায়াটা পরে আগের মতো রইবেই না মোটে।
অথবা ঝাঁপ দেবে আমার মাঝে, হাওয়া-পাখি
ছুঁড়বে ওর ছায়াটা পাকাপাকি
আধেক-খোলা ঠোঁটে।
(Mirkka Rekola, In my place)
সির্কা টুর্কা
(ফিনল্যান্ড – ১৯৩৯-২০২১ )
জীবন হাওয়ায়-দোলা বাড়ি এক
জীবন হাওয়ায়-দোলা বাড়ি এক যার
দেয়ালের খাঁজে আর সিঁড়ির ধাপের ভাঁজে গজাচ্ছে আগাছা,
হঠাৎ কান্নার মাঝে হাসি।
তড়িঘড়ি বাড়িটাকে বেচে দিতে হবে, ভেঙে পড়ার আগেই,
ঘরগুলি থেকে খিস্তি বেরুচ্ছে এখনই।
কী-যে মনে পড়ো তুমি, যে-সময় বিজুলিতে ছাওয়া
আকাশ, যখন জল ঝরে তুমি যেন ডিসেম্বরের ভেনিস।
তোমার গলাটি গোলাঘরের দরোজা, একটা গির্জার দেয়াল,
নীচে থেকে দেখি যদি, ঊর্ধ্বপানে সরু-হ’য়ে-যাওয়া,
যখন দাঁড়িয়ে মইয়ে, ঠুকছিলে পেরেক।
এবং পেরেকটা, সেও আকাশের দিকে ধায় আর
আকাশটাও অনন্তের পানে, এই ধাওয়া
নিরন্তর, একটা চাকু ভেদ ক’রে গেছে হৃৎপিণ্ডকে
আকাশকে বিঁধেছে যেন একশলা পেরেক।
এ-বাড়িগুলিকে বিক্রি করতে-যে হবেই, ভাবি, এ-দালানকোঠা,
আর আমার মনে পড়ে সন্ন্যাস১-এতে
মুর্গিরা কেমন ক’রে রাস্তাটা পেরয়
এবং দেওদারগুলি দাঁড়ায় কাতারে
ধার্মিক বালকদের মতো।
(Sirkka Turkka, Life is a house swaying in the wind)
১ ফিনল্যান্ডের স্থানবিশেষ।
কির্স্টি সিমোনসূরি
(ফিনল্যান্ড – ১৯৪৫-২০১৯)
মর্ত্যলোকের নন্দন-উদ্যান
তুলি-হাতে তাকায় যখন বশ্১
মর্ত্যলোকের নন্দন-উদ্যানে
নিবিষ্ট, এক বাজের মতো, এবং খুব বিশদ,
আর এক চোখের চকচকে গোল পর্দায় একখানি
কাচের বল-এর প্রতিবিম্ব, প্রেমিকযুগলের
শব্দগুলি, একটা বদ্ধ জগৎ, যাতে হাত,
একটা ঊরুর উপর, একটা বিস্ফীত উদরে,
চামড়ায় তার মাপছে যেন চিন্তার কম্পন
ঠাহর করছে গর্ভাধানের পুণ্য প্রতিধ্বনি:
সুখ যে-সকল বাগ্ধারার জন্ম দেয় তারা
ফিরে যায় ঐ কাচের বলে, যখন একটা বাগান গজিয়ে ওঠে
তার ভিতরে, যখন কথা আটকে ফ্যালে গোটা
এক দুনিয়া এবং যেটি শুনতে পায় ডাক
কাচের বাইরে আরেক দুনিয়ার।
কাচের খোলসটির থেকে ঢের দূরে আরেক গ্রহ
মধ্যে ফাঁকা মহাকাশ আর সঙ্কেতহীন ভাষা,
কল্পিত বাস্তব যে-সময়, সৃজিত বিশ্বটি
কাচের বলের ভিতরে ভাসে, বশ্-এর তৈলচিত্রে।
(Kirsti Simonsuuri, The garden of earthly delight)
১ হিয়েরোনিমাস ( জেরম ) বশ্ (১৪৫০-১৫১৬), ফ্লেমিশ চিত্রকর। উদ্ভট, কিমাকার, প্রায়-আধিভৌতিক রূপকধর্মী ছবি আঁকায় বিশেষ ঝোঁক ছিল তাঁর। গার্ডেন অব অ্যর্থলি ডিলাইট্স্ তাঁর বিখ্যাত শিল্পকর্ম।
আন্নে হ্যান্নিনেন
(ফিনল্যান্ড – ১৯৫৮- )
মেয়েলি গ্রীষ্মে
আমার মেয়েলি গ্রীষ্ম ভ’রে থাকত ভ্রমর-মর্মর,
তীক্ষ্ণ ঝিঁঝিঁ, মিষ্টি প্রজাপতি।
আর ছিল বুনো বৈঁচি, শস্যের শিষ,
রঙের অযথা উদ্দীপন।
পৃথিবী নরম ছিল ছোট্ট, নাঙ্গা পায়ের তলায়,
এবং আমার মন, ছেঁড়া পেঁজা-পেঁজা মেঘ দূরের আকাশে।
দীর্ঘ ছিল গ্রীষ্মদিন, ধুক-ধুক কাঁপতে-থাকা সূর্যের বুক।
রেশমি প্রান্তরের ঘ্রাণ হানা দিত রাতে বিছানায়।
আমার ঘুমন্ত চামড়া শ্বাস নিত গোলাপের মতো।
(Anne Hänninen, In my girlish summers)
এইনার মা’র গুদ্মুন্ড্সন
(আইসল্যান্ড – ১৯৫৪- )
গাথক হোমার
বৃষ্টিভেজা দুপুরবেলায়,
বহুপর্যটিত এক দ্বীপের জাহাজে ভেসে-ভেসে
গাথক হোমার এসে পৌঁছুলেন দূর রেইক্য়াভিক।
ঘাট থেকে হেঁটে এসে
ট্যাক্সি নিলেন, যেটি তাঁকে
বর্ষণধূসর যত রাস্তা-বেরাস্তায় নিয়ে চলল দিগ্বিদিক্
থম-মারা বাড়িগুলি ফেলে বাঁকে-বাঁকে।
চৌরাস্তার মোড়ে ঘুরে ব’সে সীটে
ড্রাইভারকে বললেন তিনি চেপে দীর্ঘশ্বাস:
‘হায়, এ-কি এমনকি কল্পনা করা যায়
স্যাঁতসেঁতে ম্যাটমেটে এই একঘেঁয়েমিটিতে
এমন মশহুর এক কথক-জাতির বসবাস?’
‘ঠিক এই জন্যেই,’ বলল তখন ড্রাইভার,
‘ফোঁটাগুলি যে-সময় ভাঙে জানালায়,
ইচ্ছাই হবে না কোনো কেচ্ছাই শোনবার।’
জানালায় ফোঁটাগুলি ভাঙে যে-সময়
আর উপসাগরে ঘোরা ঘন কুয়াশায়
ঢেকে যায় যুগপৎ পাহাড় ও সাগর,
তখন বিতং ক’রে বলবার মতন কিছু নাই
আছে খালি রাস্তার ছপছপ,
নাই কোনো জাদুকরি গান
কিংবা কোনো কিন্নর ভাস্কর,
কেবলই বিলীয়মান যত পদচ্ছাপ
বৃষ্টিটা মিলিয়ে যায় যেভাবে বিশাল পারাবারে
কিংবা শূন্যতায়, আর যে-দমকা তুফান
খেউড় গায় আর ঝাপটা মারে…
ধূসর বোরকায়
সময় গুঁড়িয়ে পথ হাঁটে,
কী-এক বেমক্কা পাখি ঠায়
স্বপ্নহীন ঝুলে থাকে শহরের ছাদে,
বৃষ্টির হিজাব মেঘেদের
চেপে বসে গলার উপরে,
তারপর পৃথিবী জুড়ে ধীরে, নির্বিবাদে,
একটা জালের মতো রাতের আঁধার ঝ’রে পড়ে।
নায়ের বাদাম খুলে বেরিয়েছে দরিয়ায় কেউ,
ওখানে সুরেলা এক ঢেউ,
একটা বাড়ি, ঘুমে গুটিসুটি,
স্বপ্নে নিংড়ে-নেওয়া একটা গান,
দুনিয়ার ছোট-ছোট ঢেউয়ের বৃত্তটি
এক কালো সমুদ্রে ছড়ায়
আর ছোটে আলোকের যান
শিখা হ’য়ে রাস্তায়-রাস্তায়।
(Einar Már Gudmundsson, Homer the Singer of Tales)
এলিসাবেট য়্যোকুল্স্ডোট্টির
(আইসল্যান্ড – ১৯৫৮- )
যে-শিশুটি পেয়েছে ভর্তুকি
এক-যে ছিল বাচ্চা, তার বাপ-মা ছিলেন এতই সুবিবেচক, তাঁরা বাচ্চাটিকে নিয়মিত ভর্তুকি দিতেন। অবশ্য তার গায়ে কোনো পট্টি কিংবা ব্যান্ডেজ কেউ কখনও দ্যাখে নি। বাচ্চাটা ঐ ঘুষগুলিকে খুশিমনেই নিত, তবে আস্তে-আস্তে লোভের শিকার হ’য়ে পড়েছিল-যে সে সেটা আত্ম-নিপীড়নের চিহ্ন হ’য়ে ফুটত মুখে। গল্পটা শেষ করতে আমার যোগ করতেই হয়, যে, যখন বড় হ’য়ে উঠল সে, এই একগুঁয়ে ভুল-ধারণাটা কায়েমি হ’য়ে গেল মাথায় তার: জীবন তার ধারেই কিছু ধার।
(Elisabet Jökulsdóttir, The Child Who Received Compensation)
সাত ছেলে
ছেলেঘেঁষা মেয়েটি-তো একই সাথে অনেক ছেলের প্রেমে পড়ল। পয়লাটা গলা এত মধুর, মেয়েটা শুতে চাইল তার সাথে; দুসরাটার চওড়া কাঁধে আঙুল চালাতে তার লোভ হ’ল খুব; তৃতীয়টি মঞ্চে করত ঐসা অভিনয়, যে, তার ফেরত এল জীবনে বিশ্বাস; চৌঠাটার পূজা আর প্রশংসায় সে-তো বাধ্য হ’য়ে পড়ত ফের আয়নায় তাকাতে; পঞ্চমের চোখ-দু’টি ছিল নক্ষত্রের মতো, ইচ্ছা করত তার সাথে নৌকা বেয়ে যেতে; ষষ্ঠটি যথেষ্ট ছোট ছিল তার চেয়ে আর তখনই সময় তার সুর পাল্টেছিল; অথচ সপ্তমই ছিল সকলের সেরা, কেননা কিছুই তার মালুম হ’ত না আর, খালি টের পেত তার তাবৎ তারগুলি বেজে উঠেছে একসাথে আর পাহাড়ের ধার থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ছে সে পাগলাঝোরা। আর তাকে রিং দিতে যখনই গিয়েছে, হায়, ফোনটায় আগুন ধ’রে গেছে।
(Elisabet Jökulsdóttir, The Seven Boys)
লিন্ডা ভিল্হ্যা’ল্ম্স্ডোট্টির
(আইসল্যান্ড – ১৯৫৮- )
মোনালিসা
প্রথম মোজেইক
সেদিন সকালে একটা রামধনু সমুদ্র থেকে উঠে এসেছিল
এন্যেয়্১-এর পশ্চিম দিকে
ভিদেয়্১-এর পশ্চিম দ্বীপের পূর্বে গোত্তা খেয়েছিল
আল্লার ওয়াস্তে যদি বৃষ্টি ঝ’রেই থাকে
ছাইয়ের বালির আর চুনাপাথরের
কোন্ কাণ্ড হয়েছিল তার আগের রাতে?
দ্বিতীয় মোজেইক
সে-রাত মাথায় চ’ড়ে ব’সছিল আমার
দু’জন মহিলা মারা গেছিল তৃতীয় মহিলাও
সুবেসাদিকের অক্তে উবে যাচ্ছিল
মাথায় আসছিল খালি তিনটাই বিষয়
যন্ত্রণায় আতঙ্কে ও অ্যানেসথিসিয়ায়
কুঁকড়ে-যাওয়া মুখ
শেষ-নিঃশ্বাসের সাথে
মুখে-ফোটা হাসি
এবং শেষমেশ
মেনে-যে নিলাম অর্থ আমি
শান্তি শব্দটির
তৃতীয় মোজেইক
মসৃণ আর সরল চৌহদ্দি আর মণ্ডপে থামের সারি আর কেউ যদি ভারি ব্রনজের দরোজা দিয়ে ঢুকে দিয়ে একাকী দাঁড়ায় একটা খিলানের নীচে আর মাথার উপরে তার একটা গোলাকার গর্ত খোলা থাকে আকাশের দিকে আর চোখ তার দিগন্ত চেনে না তার ঠোঁট থেকে নিংড়ে বা’র করা হয় সুললিত “ওহ্!” যেটি বা’র করতে যুঝেছে সে বছর-বছর-ব্যাপী কৃচ্ছ্রসাধনায়। পরে সে জবরদস্তি ক’রে বলবে চোখে তার পড়েছিল বালির এক-কণা।
(Linda Vilhjálmsdóttir, Mona Lisa)
১ এন্যেয়্ আর ভিদেয়্ (Engey & Viðey) আইসল্যান্ডের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমে ( রেইক্য়াভিক-এর কাছে ) দু’টি ছোট্ট দ্বীপ।
গির্দির এলিয়াসসন
(আইসল্যান্ড – ১৯৬১- )
ব্র্যুগেল১-এর নানা নমুনা
পাহাড়ের উপরে এক দেহাতি সবুজ-রঙ গির্জা
আর দাঁড়কাকের দঙ্গল
আর এক হারমোনিকা-বাজিয়ে
সারাই করছে তার ঘরের চাল
জানালার হলুদ পাল্লা
বুক চিতিয়ে হাঁটছে মুণ্ডুহীন মুর্গিগুলি
ঘোলা-কাচের উপর
শিরিস কাগজ ঘ’ষে চকচকে করছে সন্ধ্যা
পর্বতের খাড়াইগুলিকে
আমার মন
ঝেঁটিয়ে বা’র করছে যত চিল-চিৎকৃত চিন্তা তার
বাচ্চারা স্কেট করছে জ’মে-যাওয়া পানিবাঘ ডোবায়
একটা বাঁকাচাঁদের তলায়
অ্যাকর্ডিয়ন-বাদিকাটি লম্ফের আলোয়
সানগ্লাস প’রে
পড়ছে
ছোট্ট পাখিগুলি ঘুমাচ্ছে স্বপ্নহীন
চিমনির ভিতর
(Gyrdir Eliasson, Bruegel Variations)
১ ষোড়শ শতকের বিশ্ববিখ্যাত ফ্লেমিশ চিত্রশিল্পী পিটার ব্র্যুগেল। তাঁর বিখ্যাত চিত্রকর্মগুলির মধ্যে আছে দ্য ফল অব দ্য রেবল এঞ্জেলজ ও দ্য ফল অব ইকারুস।
অনুবাদক সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ
কবি, ঔপন্যাসিক ও অনুবাদক।
প্রচ্ছদ : ফ্লেমিশ চিত্রশিল্পী পিটার ব্র্যুগেলের আঁকা দ্য ফল অব দ্য রেবল এঞ্জেলজ
Leave feedback about this