কবিতা বিশেষ সংখ্যা

অতনু ভট্টাচার্য | ৫টি কবিতা | উৎসব সংখ্যা ২০২৪

কে কে যেন রোজ আমার সাক্ষাৎকার নেয়
আমিও কত কী বলতে থাকি,
কোনও প্রশ্নের উত্তর দিই না—
এত দীর্ঘ সাক্ষাৎকার … চলছে তো চলছেই…
প্রশ্নের বুকে মুখে সারা দেহে রোদের মতো ছায়ার মতো
কথা আর কথা, যাকে উত্তর বলা যায় না।

সাক্ষাৎকার কি এমন অনুচ্চারিত সাবলীল ও মীমাংসাহীন হবে ?
এই প্রশ্ন কোথাও জেগে উঠছে, তবু, মনে মনে অধীর হয়ে উঠছে কথা !
ক্রমশ পত্রপল্লবিত হচ্ছে।
কবে, কখন, আদৌ— এসব উৎকন্ঠা থেকে পরস্পর পরস্পরকে
প্রভাবিত করা কতটা সম্ভব ?
ক্রমাগত প্রশ্ন গজাতে থাকে…।
প্রবাহের দুই ভিন্নতা কথার পলি টেনে বয়ে চলেছে কেবলই সাগরসঙ্গমে…
অপেক্ষাই সব উত্তর। অপেক্ষাও এক অর্থবহ ইংগিত। দেখো, ছোটো ছোটো
অপেক্ষা কেমন বড় আর উঁচু ঢেউ হয়ে উঠে আকাশের গায়ে ধাক্কা দিচ্ছে !

নালাটার অপরাধ সহানুভূতির মতো প্রশ্নহীন
পড়ে থাকা।
যেমন পাঠ্যসূচিতে থাকে।

সেদিকেই ডাল নুইয়ে মাধবীলতা কেমন সমীহ গ্রহণ করছে !

সন্ধ্যা হলো। চা-দোকানগুলো জমে উঠছে মোড়ে মোড়ে।
এদিকটায় ঘিঞ্জি বাড়ি, গলিগলা, নিতান্ত গুমোট,
বুক ঠেলে জ্বালা উঠছে — বিবেচনাবেদনার।

হাঁটতে হাঁটতে এবড়োখেবড়ো পথ
এপাড়া ওপাড়া হয়ে ফেরা।

স্মৃতি যেন স্মৃতির মতোই—

হাঁটতে হাঁটতে ফিরে আসলো যে মানুষটা
তার ক্লান্তি এলোমেলো শুয়ে আছে ঠিক তারই মুখে।

মুড়কি, মুড়ি জ্ঞান আছে
তবু বলছি,
পাড়া ও পৃথিবী একই—
জায়গা ভেদে,
লম্বা বেঁটে ফর্সা কালো
আবহাওয়া অনেক রকম
ভাষা ধর্ম বর্ণ খাদ্য আচার বিচার
বদলে বদলে আছে।

মিল ও অমিল
সুধা ও গরল
ইত্যাদি, প্রভৃতি টপকে
তবু বলছি,
পাড়া ও পৃথিবী একই—
প্রবৃত্তির জয়ঢাক বাজছে হুকুমের মতো

পশুত্বকে লুকোনোর ছল অবিরাম
ছুতা খুঁজছে !

জীবনের প্রতিপক্ষ কে?
ভেবে ভেবে জীবন ফুরিয়ে এল তার

উটকো হাওয়া বলেছিল: জীবনের প্রতিপক্ষ তো জীবন !
উটকো হাওয়া বলেছিল: দ্বন্দ্ব আর গতি…

তিনি কানে তোলেননি,
তিনি কেবলি উদাস থেকেছেন

কোনো এক প্রশ্নাতীত প্রতারক আছে—
এই ভাবনা— লাভা স্রোত নিয়ে তিনি
আত্মমর্মরিত, স্থির হয়ে আছেন।

হতে পারত,
হয়নি বলে, অগ্নিশিখা কি জ্বলবে না?
প্রশ্ন শুনে হাওয়ার মতই কারা বলেছিল যাই
কারা যেন কূট তর্কে হাওয়া করেছিল গরম
কেউ কেউ যেনো সংস্কারের পক্ষপাতি ছিল
আমার কিছুই মনে নেই আর
সাক্ষ্যচিহ্ন প্রয়োজন নেই—
পুঁজির শাসন
বাজার ত্রাসন
সইতে সইতে বেলা বয়ে যায়

স্বপ্নে নিহিত প্রশ্ন যেখানে
প্রশ্নে নিহিত স্বপ্ন যেখানে
তার লয় নেই আর ক্ষয় নেই
এটুকু বুঝেছি আর কিছু নয়

লোলা বেচছে কোন অভিনয়
বুঝতে পারছি
বুঝতে পারছি
সুভদ্রার ঘুমের মতোই
ভ্রান্তি ছিল
ভীষণ ভ্রান্তি
গভীর ব্যথার ক্লান্তি শেষে
নিঃশ্বরিক্ত মানুষের ক্ষত
শুনছি তাকে
শুনছি তাকে…
কথায় কথায়
বাররার
যার
গলা ধরে আসে…

    Leave feedback about this

    • Rating

    PROS

    +
    Add Field

    CONS

    +
    Add Field